Plane Crash in Ahmedabad

বাড়ির উঠোনে কফিনে শায়িত পুত্রের দেহ, হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে অশীতিপর বৃদ্ধ! বাবাকে দেওয়া কথা অধরাই থাকল পাইলট সুমিতের

এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা। তাঁর জন্য সব সময় উদ্বেগে থাকতেন সুমিত। যখনই কাজে যেতেন, তাঁকে বলে যেতেন, বাবার দিকে একটু নজর রাখতে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২৫ ১৩:২৪
Share:

মুম্বইয়ের বাড়িতে সুমিতের মরদেহ পৌঁছোয় মঙ্গলবার সকালে। পুত্রের দেহের সামনে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে বাবা, পাশে সুমিতের মা। ছবি: রয়টার্স।

বাড়ির উঠোনের মাঝে কফিনে শায়িত এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের পাইলট সুমিত সবরওয়ালের দেহ। বাড়িতে আত্মীয়, পড়শিদের ভিড়। থেকে থেকেই সেই ভিড়ের মধ্যে থেকে কান্নার রোল উঠছিল। পড়শিরা কেউ এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না, পাড়ার অত্যন্ত প্রিয় মানুষটি আর নেই। ভিড়ের মাঝখান থেকেই এক পা, দু’পা করে এক অশীতিপর বৃদ্ধকে অশক্ত শরীরে এগিয়ে আসতে দেখা গেল। তাঁকে এক জন ধরে নিয়ে এলেন কফিনের সামনে।

Advertisement

আহমদাবাদে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের পাইলট সুমিত সবরওয়াল। ছবি: সংগৃহীত।

ওই কফিনেই যে তাঁর পুত্রের দেহ শায়িত আছে! কান্না চাপার চেষ্টা করলেন। কিন্তু পারলেন না। পুত্রের কফিনের সামনে এসে দাঁড়ালেন। হাতজোড় করলেন। তার পর কান্নায় ভেঙে পড়লেন। তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেন কেউ কেউ। পুত্রহারা পিতার কান্না দেখে পড়শিরাও নিজেদের কান্না আর ধরে রাখতে পারলেন না। এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘এ দৃশ্য দেখা যায় না। এই বয়সে এসে ছেলের মৃত্যু দেখতে হচ্ছে বাবাকে!’’ ডিএনএ পরীক্ষার পর সুমিতের দেহ শনাক্ত করা হয়েছিল। তার পর মঙ্গলবার সকালে মুম্বইয়ে বাড়িতে পৌঁছোয় পাইলট সুমিতের দেহ। সুমিতের সঙ্গেই কাজ করতেন এমন এক ক্রু সদস্য বলেন, ‘‘সুমিত স্যরের সঙ্গে কাজ করা সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। তিনি অত্যন্ত দক্ষ পাইলট ছিলেন। অত্যন্ত অমায়িক ছিল তাঁর আচরণ। কখনও নিজের পদের পরোয়া করেননি।’’

এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা এবং মা। তাঁদের জন্য সব সময় উদ্বেগে থাকতেন সুমিত। যখনই কাজে যেতেন, তাঁকে বলে যেতেন, বাবা-মায়ের দিকে একটু নজর রাখতে। এক আত্মীয় বলেন, ‘‘বৃদ্ধ বাবাকে বাড়িতে রেখে কাজে গিয়েও বার বার ফোন করে খোঁজ রাখত সুমিত। দুর্ঘটনার আগেই বাবাকে বলেছিল, খুব তাড়াতাড়ি কাজ থেকে ইস্তফা দেব। তোমার দেখাশোনা করব।’’ কিন্তু বাবাকে দেওয়া সেই প্রতিশ্রুতি অধরাই থেকে গেল সুমিতের। গত ১২ জুন এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭১ বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুমিতের। ওই দুর্ঘটনায় মোট ২৪১ জন বিমানযাত্রী, ক্রু সদস্য এবং পাইলটের মৃত্যু হয়েছে। এক যাত্রী বেঁচে গিয়েছেন। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭৪।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement