কদম-কদম: নাশিক থেকে মুম্বইয়ের পথে কৃষকদের পদযাত্রা। বৃহস্পতিবার। ছবি: পিটিআই
মিছিল শুরুর আগেই অনেককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বাকিদের রাত কেটেছে খোলা আকাশের নীচে। খাবারও জোটেনি সকলের। সব বাধা উপেক্ষা করেই বৃহস্পতিবার সকালে নাশিক থেকে রাজধানী মুম্বইয়ের উদ্দেশে হাঁটতে শুরু করলেন মহারাষ্ট্রের কয়েক হাজার কৃষক।
ঠিক গত বছরের মতোই।
গত কালই নাশিক থেকে সিপিএমের কৃষক সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভার নেতৃত্বে ‘লং মার্চ’ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। গ্রেফতার করা হয় দু’শোরও বেশি কৃষককে। এই অবস্থায় কৃষক সভার নেতারা জানিয়ে দেন, কোনও চাপের মুখেই তাঁরা লং মার্চ বন্ধ করবেন না। একদিন পিছিয়ে হলেও যাত্রা হবেই। পরিস্থিতি বুঝে মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী গিরিশ মহাজন গত কাল রাতে নাশিকে দেখা করেন সিপিএমের কৃষক নেতাদের সঙ্গে। কিন্তু সেই বৈঠকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। পরে কৃষক সভার সভাপতি অশোক ধাওয়ালে বলেন, ‘‘মন্ত্রী জানিয়েছেন, আমাদের দাবিগুলির কথা তিনি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসকে জানাবেন।’’ বৈঠকের পর মহাজন অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন থামবে না বলে জানিয়েছেন ধাওয়ালে।
কৃষিঋণ মকুব, ভূমিহীন আদিবাসীদের জঙ্গলের জমির পাট্টা, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, সেচের সুবিধা এবং কৃষকদের পেনশনের দাবিতে গত কয়েক বছর ধরেই আন্দোলনে নেমেছে মহারাষ্ট্রে সিপিএমের কৃষক সংগঠন। মুম্বই-আমদাবাদ বুলেট ট্রেন প্রকল্পের বিরুদ্ধেও সরব তাঁরা। কৃষকদের দাবি, ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিপুল সংখ্যক কৃষক তাঁদের চাষের জমি হারাবেন। গত বারও এই দাবিগুলি নিয়েই পায়ে হেঁটে নাশিক থেকে মুম্বই পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রায় ৫০ হাজার কৃষক। দেশের ‘অন্নদাতা’দের সেই মিছিলকে সমর্থন করে পাশে দাঁড়িয়েছিল ‘আমচি মুম্বই’। বিরোধীরাও জোট বেঁধে সেই মিছিলকে সমর্থন করেছিল। প্রবল চাপের মুখে সে বার কৃষকদের দাবি মেনে ছয় মাসের মধ্যে তা পূরণ করার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেবেন্দ্র ফডণবীসের সরকার। কৃষক সভার অভিযোগ, বছর পেরিয়ে গেলেও বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য এবং কেন্দ্র সরকার প্রতিশ্রুতি রাখেনি। সেই ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র প্রতিবাদেই ফের এই লং মার্চ। আট দিনে ১৮০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মুম্বই পৌঁছবেন কৃষকেরা। কৃষক সভার দাবি, গত বারের সংখ্যাকে ছাপিয়ে প্রায় লক্ষাধিক কৃষক পা মেলাবেন এ বারের লং মার্চে।
আরও পড়ুন: সার্জিকাল স্ট্রাইকের মাথাই রাহুলের তাস
একই দাবিতে কৃষক সংগঠন নবনির্মাণ কৃষক সংগঠনের ডাকা ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটে আজ জনজীবন ব্যাহত হয়েছে ওড়িশায়। কংগ্রেস এবং বিজেপি ওই ধর্মঘটকে সমর্থন করেছে।