twitter

কৃষক বিক্ষোভে সরকারের পাশেই টুইটার

সরকারি ধমকেই স্বাধীনতার ঝান্ডা ধুলোয় ফেলে দিলেন টুইটার কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১৩
Share:

ছবি পিটিআই।

সরকারি ধমকেই স্বাধীনতার ঝান্ডা ধুলোয় ফেলে দিলেন টুইটার কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা— ইত্যাদি নিয়ে নানা কথা বলছিলেন মাইক্রোব্লগিং টুইটারের কর্তারা, যাঁরা ফেসবুকও চালান। দিল্লিতে ৭৯ দিনের টানা কৃষক আন্দোলনকে বলা হচ্ছে এই মুহূর্তে পৃথিবীর সব চেয়ে বড় গণতান্ত্রিক আন্দোলন। কিন্তু কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের ঘুম কেড়েছে বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে এই আন্দোলন। দেশে তো বটেই, বিশ্ব জুড়ে এই আন্দোলনের প্রচারে টুইটারের একটি বড় অবদান রয়েছে, যা বিজেপি সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে প্রায় দেড় হাজার টুইট ও টুইটার হ্যান্ডল চিহ্নিত করে তা মুছে দিতে বা অকেজো করে দিতে টুইটারের ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বলেছিল কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। এগুলির বেশির ভাগই ছিল সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী বা রাজনীতিকদের। টুইটার কর্তৃপক্ষ তাঁদের টুইটগুলি বাদ দিয়ে সরকারের চিহ্নিত অন্য কিছু টুইট মুছে দিয়েছিলেন। সংস্থার এক কর্তা তখন বলেন, “সাংবাদিক, রাজনীতিক বা মানবাধিকার কর্মীদের টুইট মোছা বা টুইট হ্যান্ডল ব্লক করাটা টুইটারের নীতি নয়। এর ফলে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব হয়।”

এর পরে বুধবার টুইটারের ভারতীয় কর্তাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি সচিব। সেই বৈঠকে কী কথা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক বিবৃতি দিয়েই তা জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সাফ সাফ টুইটার কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা ‘আইন শৃঙ্খলা মানেন না’। কৃষক বিক্ষোভকে সমর্থন করে যাঁরা ‘উস্কানি দিচ্ছেন ও নানা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য’ ছড়াচ্ছেন, তাঁরাও আইনভঙ্গ করছেন। এই ‘কৃষকপ্রেমীদের’ অনেকেই ‘পাকিস্তান ও খলিস্তানের সমর্থক’। টুইটার যদি সরকারের কথা না-শোনে, ভারত থেকে তাদের পাট তুলে দেওয়ার কথা ভাবা হবে। শুক্রবারের হিসেব, গত দু’দিনে কেন্দ্রীয় সরকারের দাগিয়ে দেওয়া টুইটের ৯৭ শতাংশের বেশি বন্ধ করে দিয়েছেন টুইটার কর্তৃপক্ষ। টুইটারের গ্লোবাল পাবলিক পলিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট মনিক মেসে বলেছেন, “ভারতে আমরা সে দেশের আইন-শৃঙ্খলা মেনেই কাজ করব।” আইন বিষয়ক কর্তা জিম বেকারও বলেছেন, “ভারতের আইন ও নিয়মগুলি মেনে চলতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ!” নেটিজ়েনরা বলছেন, অর্থাৎ আন্দোলনকারী কৃষকেরা টুইটার কর্তৃপক্ষের চোখে এখন থেকে ‘পাকিস্তানের সমর্থক, খলিস্তানি এবং আইন ভঙ্গকারী!’ মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নীতিও আপাতত স্থগিত রাখলেন তাঁরা।

Advertisement

দিল্লিতে কৃষক আন্দোলন, তা দমনে সরকারের বলপ্রয়োগ, ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত এবং সাংবাদিকদের গ্রেফতারি নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আলোচনার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন কয়েক জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি, যাঁদের সিংহ ভাগই বিরোধী লেবার পার্টির। তবে হাউস অব কমন্সে সরকারি দলের নেতা জ্যাকব রিজ়-মগ শুক্রবার জানিয়েছেন, বিষয়টি একান্ত ভাবেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটাই সরকারের অবস্থান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন