দু’দশকেরও বেশি সময় নিজের দেশেই শরণার্থী হয়ে আছেন তাঁরা। আজ কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপত্যকা ছাড়ার বার্ষিকীতে তাঁদের ক্ষত আরও খুঁচিয়ে তুলল ফারুক আবদুল্লার বিতর্কিত মন্তব্য।
জঙ্গি সন্ত্রাস ও বিরুদ্ধ প্রচারের ফলে ’৯০-এর দশকের গোড়ায় উপত্যকা ছাড়েন কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়। দেশের অন্য প্রান্তে শরণার্থী শিবিরে স্থান হয় তাঁদের। তার পর থেকেই রাজনীতির অঙ্গনে বার বার টানাহেঁচড়া হয়েছে তাঁদের নিয়ে। কিন্তু আর উপত্যকামুখী হতে পারেননি হিন্দু পণ্ডিত সম্প্রদায়। আজ উপত্যকা ছাড়ার ২৫ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর যন্তর-মন্তরে বিক্ষোভ দেখান পণ্ডিত সম্প্রদায়ের মানুষ। এই বিষয়ে প্রচার চালাতে একটি ভিডিও তৈরি করেছেন পণ্ডিত সম্প্রদায়ের মানুষ অনুপম খের। সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে প্রচার।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে পণ্ডিতদের নিয়ে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে ফারুক আবদুল্লা বলেন, ‘‘পণ্ডিতদের বোঝা উচিত কেউ তাঁদের কাছে ভিক্ষের ঝুলি নিয়ে গিয়ে বলবে না যে ফিরে আসুন। ফিরে আসতে তাঁদেরই উদ্যোগী হতে হবে।’’ ফারুকের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে তিনি পণ্ডিতদের বার বার ফিরতে অনুরোধ করেছেন। এক বার ওই সম্প্রদায়ের অফিসার ও চিকিৎসকদের ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছিল জম্মু-কাশ্মীর সরকার। ফারুকের দাবি, তখন দিল্লিতে থাকা পণ্ডিতদের অনেকেই তাঁকে জানিয়েছিলেন তাঁরা আর ফিরতে চান না। ফারুক দাবি করেন, হুরিয়ত নেতারাও পণ্ডিতদের ফিরতে অনুরোধ করেছেন।
ফারুকের ছেলে ও জম্মু-কাশ্মীরের আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবার নিশানা করেছেন বিজেপিকে। হিন্দু কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পরিস্থিতি নিয়ে বরাবরই সরব বিজেপি। যে সব দল দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিয়ে সরব, সেই সব দল কাশ্মীরে সংখ্যালঘু পণ্ডিতদের নিয়ে আন্দোলন করে না বলেও অভিযোগ করেছে তারা। এখন শ্রীনগরে বিজেপি-পিডিপি সরকার। কেন্দ্রেও ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদী। ওমরের বক্তব্য, ‘‘এই সরকার পণ্ডিতদের ফেরাতে পদক্ষেপ করবে বলে আশা ছিল। কিন্তু কিছুই হয়নি।’’
পণ্ডিত সম্প্রদায়ের নেতাদের মতে, যত ক্ষণ না নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হচ্ছে, তত ক্ষণ উপত্যকায় ফেরা অসম্ভব। কেন্দ্র-রাজ্য, কেউ পণ্ডিতদের ফেরাতে উদ্যোগী নয়।