পর্দায় জিএসটি-র নিন্দা করে গৈরিক কোপে ‘মের্সাল’

গেরুয়া শিবিরের ‘আদর্শ-বিরোধী’ হলে তো বটেই, বিজেপি সরকারের ভাবমূর্তিতে আঘাত লাগতে পারে, এমন কিছুও যাতে না দেখানো হয়, সে জন্য সক্রিয় গেরুয়া-শিবিরের একাংশ। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ, তামিল অভিনেতা বিজয়ের ‘মের্সাল’ সিনেমাটি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:২২
Share:

শিল্পমাধ্যমের স্বাধীনতায় ফের হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।

Advertisement

গেরুয়া শিবিরের ‘আদর্শ-বিরোধী’ হলে তো বটেই, বিজেপি সরকারের ভাবমূর্তিতে আঘাত লাগতে পারে, এমন কিছুও যাতে না দেখানো হয়, সে জন্য সক্রিয় গেরুয়া-শিবিরের একাংশ। যার সাম্প্রতিকতম উদাহরণ, তামিল অভিনেতা বিজয়ের ‘মের্সাল’ সিনেমাটি। গত শুক্রবারই মুক্তি পাওয়া ওই সিনেমায় নায়কের মুখে কিছু সংলাপ অসত্য— এই দাবিতে ওই অংশটি মুছতে বলেছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী পন রাধাকৃষ্ণন-সহ একাধিক বিজেপি নেতা। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দক্ষিণি সংস্কৃতি জগতের বড় অংশ। ঝড় সোশ্যাল মিডিয়াতেও।

সিনেমার কোন অংশ নিয়ে আপত্তি গেরুয়া-শিবিরের?

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ‘মের্সাল’-এর ‘বিতর্কিত’ অংশটিতে দেখা যাচ্ছে, নায়ক বিজয় ওরফে ভেট্রি জনতার উদ্দেশে বলছেন, ‘‘সিঙ্গাপুরের লোকে ৭% জিএসটি দেয়, বিনামূল্যে চিকিৎসা পায়। ভারত সরকার ২৮ শতাংশ জিএসটি নেয়। কিন্তু কেন বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে পারে না? আমরা ওষুধের জন্য ১২% জিএসটি দিই, কিন্তু মদে জিএসটি নেই! দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেন সিলিন্ডার থাকে না!’’

সমালোচকদের বক্তব্য, একে তো জিএসটি নিয়ে সব মহলের ক্ষোভে জেরবার বিজেপি। সিনেমাতেও তা নিয়ে ক্ষোভ জানালে বিজেপির বিপদ বাড়বেই। আর, সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সিলিন্ডার না থাকার ঘটনা তো মাত্রই ক’মাস আগের, উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের শাসনে। সেই ঘটনাতেও মুখ পুড়েছে বিজেপির।

বিজেপি-কে আক্রমণ শানিয়ে টুইটারে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। ঠিক যে ভাবে তাঁর প্রতি শাহজাদা বলে কটাক্ষ ক’দিন আগে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অমিত-পুত্র জয় শাহকে ‘শাহ-জাদা’ লিখে, শব্দের এই খেলা মার্সাল-বিতর্কেও দেখিয়েছেন তিনি। ‘মের্সাল’ নিয়ে নাক গলিয়ে তামিল অহংয়ে ঘা দেওয়া মানে আগুন নিয়ে খেলা— এটা মনে করিয়ে রাহুল লেখেন, ‘তামিল অহংকে ‘ডিমন-ইটাইজ’ করবেন না!’ যার একটা অর্থ, বিষয়টিকে অহেতুক বাড়িয়ে দানবীয় বিপদসীমা ছুঁতে দেবেন না! দ্বিতীয় অর্থটি হল, নোটবন্দির (ডিমনিটাইজ) মতো আর একটা ভুল করবেন না!

টুইটারে কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমের বিদ্রুপ, ‘‘নয়া আইন আসছে। এ বার থেকে শুধুই সরকারি প্রকল্পগুলোর প্রশংসা করে তথ্যচিত্র বানাতে পারবেন!’’ বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে দক্ষিণী সুপারস্টার কমল হাসন টুইটারে বলেন, ‘‘মের্সাল প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পেয়েছে। নতুন করে কাঁচি চালাবেন না। সমালোচকদের না থামিয়ে যুক্তি দিয়ে মোকাবিলা করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন