CJI BR Gavai

প্রধান বিচারপতির দিকে ‘জুতো’ ছুড়ে মারার চেষ্টা করা আইনজীবী আরও বিপাকে, রুজু এফআইআর

ঘটনার দিন প্রায় তিন ঘণ্টা জেরা করার পরে ওই আইনজীবীকে ছেড়ে দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু হল বেঙ্গালুরুতে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৫ ১০:৪৪
Share:

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। —ফাইল চিত্র।

দেশের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের দিকে ‘জুতো’ ছুড়ে মারার চেষ্টা করা সেই আইনজীবীর বিরুদ্ধে এ বার পদক্ষেপ করল বেঙ্গালুরু পুলিশ। অভিযুক্ত রাকেশ কিশোরের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু হয়েছে। ঘটনার দিনই ওই আইনজীবীর ওকালতির লাইসেন্স নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করে দেয় বার কাউন্সিল। এ বার এফআইআর রুজু হওয়ায় আরও বিপাকে পড়লেন তিনি।

Advertisement

গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে শুনানি চলাকালীন ঘটনাটি ঘটেছিল। ওই সময়ে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তাকর্মীরা ওই ব্যক্তিকে ধরে দিল্লি পুলিশের হাতে তুলে দেন। সেই দিন প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জেরা করার পরে তাঁকে ছেড়ে দিয়েছিল পুলিশ। দিল্লি পুলিশ ওই সময় জানায়, সুপ্রিম কোর্ট থেকে কোনও রকম অভিযোগ না পাওয়ার কারণেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মুক্তি পাওয়ার পরে সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে বিভিন্ন মন্তব্যও করেন ওই ব্যক্তি।

দিল্লি পুলিশ ওই দিন ছেড়ে দিলেও এ বার আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে বেঙ্গালুরুর বিধান সৌধ থানায়। অভিযোগকারীও এক আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, বিচারব্যবস্থার মর্যাদা রক্ষার জন্যই তিনি এই অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রাকেশের বিরুদ্ধে ‘জ়িরো এফআইআর’ (অন্য থানায় স্থানান্তরযোগ্য এফআইআর) রুজু করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৩২ ধারা (বিচারপতির কাজে বাধা) এবং ১৩৩ ধারা (কাউকে অপমান করার উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ)-য় এফআইআর রুজু হয়েছে।

Advertisement

গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির এজলাসে শুনানি চলাকালীন আচমকাই সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে তাঁর দিকে একটি বস্তু ছোড়ার চেষ্টা করেন রাকেশ। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’ অনুসারে, প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই বলছেন, প্রধান বিচারপতির দিকে জুতো ছুড়ে মারার চেষ্টা করেছিলেন ওই ব্যক্তি। আবার কারও বক্তব্য, একটি কাগজের বান্ডিল ছুড়ে মারার চেষ্টা হয়েছিল।

নিরাপত্তাকর্মীরা ওই ব্যক্তিকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরে অন্য আইনজীবীদের নিজেদের সওয়াল চালিয়ে যাওয়ার জন্য বলেন প্রধান বিচারপতি। এজলাসে উপস্থিত আইনজীবীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এই সব দেখে বিভ্রান্ত হবেন না। আমরা বিভ্রান্ত নই। এ সব ঘটনা আমার উপর প্রভাব ফেলতে পারে না।” আইনজীবীর এমন কাণ্ডের জেরে কিছুক্ষণের জন্য বিঘ্নিত হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসের কাজকর্ম।

প্রধান বিচারপতির উপর এমন আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সমাজে এই ধরনের নিন্দনীয় কাজের কোনও জায়গা নেই।’’ একই সঙ্গে ঘটনার সময় দেশের প্রধান বিচারপতির ভূমিকারও প্রশংসা করেন তিনি। তিনি আরও জানান, “সুপ্রিম কোর্টের প্রাঙ্গণে তাঁর উপর হামলায় প্রত্যেক ভারতীয় ক্ষুব্ধ। এটি অত্যন্ত নিন্দনীয়।’’ প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি এমন ঘটনার নিন্দা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত জঘন্য কাজ। কার্যত ভারতের সংবিধানের উপর হামলা।” মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় একই সুরে এই ঘটনার নিন্দা করেছেন, কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীও। তাঁর কথায়, “প্রধান বিচারপতির উপর আক্রমণের নিন্দা করার কোনও শব্দ নেই। এটি কেবল তাঁর উপরই নয়, আমাদের সংবিধানের উপরও আক্রমণ।’’ লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও ঘটনার নিন্দা করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement