স্মরণীয় রায় সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে

২০১২ সালে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি ঘোষের কার্যকালের শেষ দিনে সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ আইনকে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ বলে রায় দিয়েছিল তাঁর ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৯ ০৫:০১
Share:

—ফাইল চিত্র।

মামলা শুনতে শুনতে তাঁকে হাসতে দেখলেই নাকি বোঝা যেত, খারিজ হতে চলেছে মামলাকারীর আর্জি। বছর দুয়েক আগে বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষের বিদায় সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে হাল্কা মেজাজে এই স্মৃতিচারণ করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। আর দেশের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জে এস খেহর বলেছিলেন, ‘‘জয়ললিতার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলার রায়ের জন্য বিচারপতি ঘোষকে চিরদিন মনে রাখা হবে।’’

Advertisement

শুধু কি জয়ললিতা মামলা? তামিলনাড়ুর প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বান্ধবী শশিকলাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ রায়ের সঙ্গে জড়িয়ে এই বাঙালির নাম।

সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামই ধরা যাক। ২০১২ সালে কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি ঘোষের কার্যকালের শেষ দিনে সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ আইনকে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ বলে রায় দিয়েছিল তাঁর ডিভিশন বেঞ্চ। নন্দীগ্রামে গুলিচালনার ঘটনাকেও অসাংবিধানিক বলে রায় দিয়েছিলেন তিনি— তৎকালীন প্রধান বিচারপতি বিকাশ শ্রীধর শিরপুরকরের সঙ্গে মিলে। কলকাতা থেকে ১৫ বছরের পুরনো বাণিজ্যিক গাড়ি বাতিলের রায়ের সঙ্গেও তিনি জুড়ে রয়েছেন। মহানগরের পরিবেশ রক্ষায় সেই রায়কে যুগান্তকারী বলে মনে করেন পরিবেশকর্মীরা।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের অধিকার রক্ষার জন্য আইনজীবী মহলে বি‌খ্যাত প্রাক্তন বিচারপতি ঘোষ। বৃদ্ধ বাবা-মাকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চনা এবং হেনস্থার একাধিক ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে বসে স্মরণীয় রায় দিয়েছিলেন তিনি। এক আইনজীবী মনে করিয়ে দিয়েছেন, মায়ের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে পুত্র ও পুত্রবধূকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মায়ের পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

তাঁর পরিবারটাই ‘আইনের পরিবার’। ১৯৫২ সালের ২৮ মে গোয়াবাগানে জন্ম প্রাক্তন বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষের। ঠাকুর্দা ইন্দ্রচন্দ্র ঘোষ সেই সময়ে কলকাতা হাইকোর্টের সলিসিটর ছিলেন। বাবা শম্ভুচন্দ্র ঘোষ ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনী পিনাকীবাবু। কলকাতা হাইকোর্টের ওয়েবসাইট বলছে, আইন পাশ করার পরে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন তিনি। ১৯৯৭ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হন। তার পর অন্ধ্র হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। ২০১৩ সালে বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন সুপ্রিম কোর্টে।

প্রাক্তন বিচারপতি পিনাকীবাবুর পুত্রও আইনজীবী। বর্তমানে পিনাকীবাবু কলকাতার রামময় রোডের বাসিন্দা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন