ধৃত চার জঙ্গি। ছবি: সংগৃহীত।
‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চলাকালীন পাকিস্তানি সেনা এবং আইএসআই-এর সঙ্গে লাগাতার যোগাযোগ রেখে চলছিল গুজরাত পুলিশের হাতে ধৃত চার আল কায়দা জঙ্গি। শুধু তা-ই নয়, প্রতিপক্ষকে তারা নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাচার করেছিল সেই সময়। একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এমনটাই দাবি করা হয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-র প্রতিবেদনে।
সমাজমাধ্যমে জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দার প্রচারিত কট্টরপন্থী আদর্শ ছড়িয়ে যাচ্ছে কয়েক জন, গোপন সূত্র মারফত এই খবর পাওয়ার পরেই গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস) চার জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম মহম্মদ ফায়েজ়, মহম্মদ ফারদিন, সইফুল্লা কুরেশি এবং জিশান আলি। প্রত্যেকের বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে। তাদের এক জনকে দিল্লি এবং আর এক জনকে উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দু’জনকে গুজরাতেরই অহমদাবাদ এবং মোডাসা থেকে ধরা হয়েছে।
এটিএস সূত্রের খবর, গত মে মাসে অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারতীর সেনার অভিযানের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে প্রচার করেছিল ধৃতেরা। শুধু তা-ই নয়, সিঁদুর অভিযান নিয়ে নানা তথ্যও সমাজমাধ্যমে দু’টি পাকিস্তানি অ্যাকাউন্টে পাঠাত তারা। সেখান থেকে তাদের ‘নির্দেশ’ও দেওয়া হত।
এনডিটিভি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ধৃতেরা আল কায়দার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার হয়ে কাজ করত মূলত। ফায়েজ়ই ওই গোষ্ঠীর মাথা। সে দিল্লিতে একটি খাবারের দোকানে কাজ করত। জিশান কাজ করত নয়ডায়, একটি মোবাইলের দোকানে। বাকি দু’জন দর্জি হিসাবে কাজ করত গুজরাতে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে গুজরাতের অহমদাবাদ থেকে চার বাংলাদেশি-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে সময় ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছিল, বেশ কয়েকটি রাজ্যে সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মে নানা ভাবে ইন্ধন জোগাচ্ছে বাংলাদেশের কয়েক জন। ভারতেরও কয়েক জন তাদের সহযোগী হিসাবে কাজ করছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে জম্মু-কাশ্মীর, কর্নাটক, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং অসমের নানা জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল এনআইএ (জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা)। পশ্চিমবঙ্গেও হানা দেওয়া হয়েছিল। কলকাতার বেনিয়াপুকুর ছাড়া তদন্তকারীরা অভিযান চালিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গেও।
কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছিল, ‘আল কায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ ভারতে সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে। তালিবানের ক্ষমতা দখলের পরে আফগানিস্তানের লাঘমান, পাকতিকা, কন্দহর, গজনী ও জ়াবুল প্রদেশে হাজারখানেক আল কায়দা জঙ্গি নতুন করে ঘাঁটি বানিয়েছেন বলে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল। নিহত ওসামা বিন লাদেন, আয়মান আল-জাওয়াহিরির হাতে গড়া সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটি গত দু’দশক ধরেই ভারতে তৎপরতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে তৎকালীন আল কায়দা প্রধান জাওয়াহিরি এক ভিডিয়োবার্তায় ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে ‘জিহাদের পতাকা’ তুলে ধরতে নতুন শাখা গড়ার ঘোষণা করেছিলেন।