উপত্যকায় আইএস? ৪ জঙ্গির মৃত্যু তুলল প্রশ্ন

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে মারা গিয়েছে উপত্যকায় আইএস-এর পান্ডা দাউদ সফি ও তার তিন সঙ্গী। পুলিশ ভ্যানে গ্রেনেড ছোড়া, পুলিশকর্মী হত্যা-সহ একাধিক নাশকতার পিছনে ছিল এই দাউদ ও তার গোষ্ঠী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৮ ০৪:১০
Share:

আশ্রয়ের খোঁজে: অনন্তনাগের শ্রীগুফওয়ারাতে জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে নিরাপত্তা বাহিনীর। নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় পাড়ি দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই

উপত্যকায় রাজ্যপালের শাসনে সেনা অভিযানের তীব্রতা বাড়তেই বড় মাপের সাফল্যের দাবি করল কেন্দ্র। শুক্রবার নিরাপত্তাবাহিনী জানিয়েছে, তাদের হাতে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের চার সদস্য নিহত হয়েছে। ওই জঙ্গিরা ইসলামিক স্টেট অব জম্মু-কাশ্মীর (আইএসজেকে) নামে একটি শাখা সংগঠনের সদস্য। এই প্রথম উপত্যকায় সরকারি ভাবে আইএসের উপস্থিতি স্বীকার করে নিল নিরাপত্তাবাহিনী। তার পরেই প্রশ্ন উঠেছে, উপত্যকায় আইএসের সক্রিয় উপস্থিতির কথা ঘোষণা কি আসলে অভিযানের তীব্রতা আরও বাড়ানোর কৌশল? এমনকি এ বারে জঙ্গি দমনের নামে স্থানীয়দের আরও বেশি চাপে ফেলা হবে বলেও অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে একাধিক মহল।

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে মারা গিয়েছে উপত্যকায় আইএস-এর পান্ডা দাউদ সফি ও তার তিন সঙ্গী। পুলিশ ভ্যানে গ্রেনেড ছোড়া, পুলিশকর্মী হত্যা-সহ একাধিক নাশকতার পিছনে ছিল এই দাউদ ও তার গোষ্ঠী। আজ সকালে অনন্তনাগের শ্রীগুফওয়ারাতে জঙ্গিরা লুকিয়ে রয়েছে খবর পেয়ে তল্লাশি শুরু করে নিরাপত্তা বাহিনী। সে সময় জঙ্গিরা গুলি চালালে মারা যান এক পুলিশ কর্মী। আহত হন দুই জওয়ান। তার পরেই এলাকা ঘিরে ফেলে জঙ্গি নিকেশ অভিযান শুরু হয়। স্থানীয়দের একাংশ জঙ্গিদের পালাতে সাহায্য করলে পুলিশ বাধা দেয়। দু’পক্ষে সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ৩০ জন স্থানীয় বাসিন্দা। মৃতদের পরিচয় জানাতে গিয়ে ডিজিপি এস পি বৈদ্য বলেন, ‘‘মৃত চার জনই আইএসের শাখা সংগঠনের সদস্য। এদের মাথা ছিল দাউদ।’’ পুলিশের দাবি, অমরনাথ যাত্রীদের উপরে হামলা চালানোর ছক কষছিল দাউদেরা। গত ক’দিনের মতো আজও যাত্রাপথের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখা হয়।

দেশের অন্তত ১৬টি রাজ্যে আইএস-এর প্রভাব রয়েছে বলে বিভিন্ন রিপোর্টে জানিয়েছে কেন্দ্র। কাশ্মীরে এ যাবৎ বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ চলাকালীন আইএসের পতাকা দেখা গেলেও রাজ্য পুলিশ বা খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ— কেউই উপত্যকায় ওই জঙ্গি গোষ্ঠীর উপস্থিতির কথা মানতে চাননি। কিন্তু রাজ্যপালের শাসন শুরু হওয়ার তিন দিনের মাথায় উপত্যকায় আইএসের উপস্থিতি মেনে নেওয়ার পিছনে কোনও কৌশলগত অঙ্ক রয়েছে কিনা, সে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেরই বক্তব্য, আইএসের জুজু দেখিয়ে অভিযানের তীব্রতা আরও বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে কেন্দ্র। যদিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, ‘‘কাশ্মীরে স্বঘোষিত কিছু আইএস সমর্থক রয়েছে। যাদের মূল সংগঠনের সঙ্গে সে ভাবে সরাসরি যোগাযোগ নেই। এরা মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে আইএসের ভাবধারায় প্রভাবিত। এদের সামর্থ্য সীমিত। দাউদ গোষ্ঠী এমনই একটি ছোট শাখা সংগঠন ছিল।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন