— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই ব্যাঙ্কের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। টাকা খাটাতেন শেয়ার বাজারেও। চলতি বছরের শুরুতে শেয়ার ভাঙিয়ে ৫০ কোটি টাকা পেয়েছিলেন। সম্প্রতি মুম্বইনিবাসী ৭২ বছরের সেই বৃদ্ধকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাঁর কাছ থেকে ৫৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার অপরাধীরা। তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, ৪০ দিন ধরে বৃদ্ধকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করে রেখে তাঁর কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেই টাকা লেনদেন করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের ৬,৫০০-রও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মারফত! এমনই ঘটনা ঘটেছে খাস দেশের বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে। এই ঘটনাকে দেশের অন্যতম বড় সাইবার প্রতারণা বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
জানা গিয়েছে, ৭২ বছরের ওই বৃদ্ধের কাছে গত ১৯ অগস্ট একটি ফোন আসে। অপর প্রান্ত থেকে নিজেকে ইডি আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বলেন, বৃদ্ধের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বেআইনি টাকা রয়েছে। এর পরেই তাঁকে ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ করেন প্রতারকেরা। ওই বৃদ্ধ ও তাঁর স্ত্রীকে বলা হয়, তাঁদের অ্যাকাউন্টে থাকা সব টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে পাঠাতে হবে, যাতে যাচাই করা যায় টাকাটি বৈধ কি না। যাচাইয়ের পর টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে ফেরত পাঠানো হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রতারকেরা। এর পর ৪০ দিন ধরে অভিযোগকারী ও তাঁর স্ত্রীকে আলাদা আলাদা ব্যাঙ্কে গিয়ে দফায় দফায় ৫৮ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা নির্দিষ্ট কয়েকটি অ্যাকাউন্টে পাঠাতে বলা হয়। লেনদেনের গোটা সময়টা ফোন চালু রাখতে বলা হয় তাঁদের। প্রতারকদের কথা মতো টাকা পাঠিয়েও দেন তাঁরা।
অক্টোবরের ৭ তারিখ হঠাৎ সন্দেহ হয় ওই দম্পতির। তড়িঘড়ি তাঁরা মহারাষ্ট্র সাইবার পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই পরিকল্পনা বদলে ফেলেন প্রতারকেরা। প্রাথমিক ভাবে মহারাষ্ট্র এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যের ১৮টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ওই অ্যাকাউন্টগুলির খোঁজ পাওয়া মাত্রই ৫৮ কোটি টাকা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৬,৫০০টি অ্যাকাউন্টে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের দাবি, সাধারণ মানুষকে মোটা অঙ্কের কমিশনের লোভ দেখিয়ে এই কাজে তাঁদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন প্রতারকেরা। এখনও পর্যন্ত এরকম সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতেরা সকলেই কমিশনের লোভে প্রতারকদের তাঁদের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিলেন। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।