হাই-স্পিড ট্রেনের গতিকেও মাত দিয়েছে হাইপারলুপ। ছবি: সংগৃহীত।
আর মাত্র বছর পাঁচ-সাত বছরের অপেক্ষা। তার পরেই পুণে থেকে মুম্বই পৌঁছনো যাবে মাত্র ২৫ মিনিটে। গল্পকথা নয়। এমনটাই হতে চলেছে আগামী দিনে। সৌজন্যে, ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান। ইউরোপ-আমেরিকা বা কোনও এশীয় দেশে নয়, বরং এ দেশেই প্রথম যাত্রা শুরু করতে পারে এই হাইস্পিড ট্রেন।
স্পিডের নিরিখে যে কোনও সুপারস্পিড ট্রেন বা বিমানকেও হার মানাবে হাইপারলুপ ট্রেন। আমেরিকার নেভাদায় এর পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। সংস্থার দাবি, ঘণ্টায় ২৪০ মাইল পর্যন্ত গতিবেগে চলতে পারে এটি। যে কোনও যাত্রিবাহী বিমানের গতিবেগের থেকে কয়েক গুণ বেশি। এমনকী, হাই-স্পিড ট্রেনের গতিকেও মাত দিয়েছে হাইপারলুপ।
ভারতের বাজার ধরতে এ দেশে হাইপারলুপ নেটওয়ার্ক চালু করতে বরাবরই আগ্রহী সংস্থার চেয়ারম্যান তথা ব্রিটিশ ধনকুবের স্যর রিচার্জ ব্র্যানসন। রবিবার এ নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তিও সেরে ফেলেছেন তিনি। সংস্থার দাবি, ওই ট্রেন চালু হলে পুণে থেকে মুম্বইয়ের পরিকল্পিত বিমানবন্দরে পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র ২৫ মিনিট। বাঁচবে কমপক্ষে তিন ঘণ্টা। সংস্থার সিইও রব লয়েডের মতে, হাইপারলুপের জন্য ভারতের বাজার খুবই আকর্ষণীয়। পাশাপাশি, তিনি আরও জানিয়েছেন, অর্থনৈতিক দিক থেকেও পুণে-মুম্বই রুট বেশ লোভনীয়।
আরও পড়ুন
কামড়ানোর প্রতিশোধ নিতে সেই সাপেরই মাথা চিবিয়ে খেলেন!
ভার্জিনের তরফে জানানো হয়েছে, চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার দু’-তিন বছরের মধ্যেই হাইপারলুপ টিউবের ট্র্যাক তৈরির কাজও হয়ে যাবে। এর দ্বিতীয় পর্যায়ে পুণে-মুম্বই রুটের ওই ট্রেন চালু হয়ে যাবে বলেই আশা সংস্থা কর্তৃপক্ষের। ট্রেন সফরের ছবিটাই আমূল বদলে দিতে পারে হাইপারলুপ ওয়ান।
সাধারণ ট্রেনের মতো একাধিক কামরা নয়, বরং একটিমাত্র কামরা থাকে হাইপারলুপে। ছবি: ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান-এর ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।
কিন্তু হাইপারলুপ ট্রেন কী? সংস্থার তরফে ব্র্যানসন জানিয়েছেন, একটি লো-প্রেসার টিউবের মধ্যে দিয়ে চলে এই সুপারফাস্ট ট্রেন। সাধারণ ট্রেনের মতো একাধিক কামরা নয়, বরং একটিমাত্র কামরা থাকে এতে। মূলত ইলেকট্রিকেই চলে। চৌম্বক শক্তির প্রভাবে কামরাটি লাইন থেকে খানিকটা উপরে উঠে যায়। এর পর ধীরে ধীরে গতি তা বাড়ায়।
আরও পড়ুন
পাইলট অমল তৈরি করছেন দেশের প্রথম বিমান কারখানা
এই ধরনের খবর আপনার ইনবক্সে সরাসরি পেতে এখানে ক্লিক করুন
গোটা দেশ জুড়ে এই ধরনের ট্রেনের টিউব তৈরি করতে আগ্রহী ব্র্যানসন। তবে প্রাথমিক ভাবে প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় মধ্য পুণে, নবি মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং মুম্বই— এই রুটেই চলবে হাইপারলুপ। ব্র্যানসনের দাবি, আগামী ৩০ বছরে এ দেশের আর্থ-সামাজিক চেহারাটাই পাল্টে দিতে পারে এই ট্রেনব্যবস্থা। সংস্থার সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, ওই সময়ের মধ্যে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে সাড়ে ৩ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক সুবিধা পেতে পারে ভারত। ব্র্যানসনের কথায়, “বিংশ শতকে ট্রেন যেমন প্রভাব ফেলেছিল, একবিংশ শতকে তেমনটাই ছাপ ফেলতে পারে হাইপারলুপ।”