রাহুল, কেজরীর রফায় চাপে ফ্রন্ট ভবিষ্যৎ

দিল্লি নেমেই আজ অরবিন্দ কেজরীবালের পাশে দাঁড়াতে, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এ দিনই মোদী বিরোধী জোট গড়ার প্রশ্নে কংগ্রেসের কাছাকাছি আসার বার্তা দিল আম আদমি পার্টি!

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

রাহুল গাঁধী এবং অরবিন্দ কেজরীবাল।

দিল্লি নেমেই আজ অরবিন্দ কেজরীবালের পাশে দাঁড়াতে, তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এ দিনই মোদী বিরোধী জোট গড়ার প্রশ্নে কংগ্রেসের কাছাকাছি আসার বার্তা দিল আম আদমি পার্টি! আগামী লোকসভা ভোটে কংগ্রেসকে দিল্লির সাতটি আসনের মধ্যে দু’টি ছাড়তে রাজি আছেন বলে খোদ কেজরীবালই বার্তা পাঠালেন রাহুল গাঁধীকে। দলীয় সূত্রের খবর, কথা চলছে আর একটি আসন নিয়েও।

Advertisement

তৃণমূল নেত্রী চাইছিলেন, কেজরীবাল কংগ্রেসের ছাতার তলায় না গিয়ে ফেডারেল ফ্রন্টে সামিল হয়ে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে সামিল হোন। কিন্তু নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দিতে যে দিন মমতা দিল্লি পৌঁছলেন, ঠিক সে দিনই কংগ্রেস-আপ আসন রফার আলোচনা এগিয়ে গেল অনেকটা। কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল কংগ্রেসকে সরিয়ে রেখে ফেডারেল ফ্রন্ট গড়ার চেষ্টা। ফেডারেল ফ্রন্টের সমর্থক নেতাদের অবশ্য বক্তব্য, মোদী বিরোধী জোটে কংগ্রেস অচ্ছুত নয়। তবে সেই জোটের রাশ আগেভাগেই কংগ্রেসের হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী নন তাঁরা। বরং যেখানে যেখানে অন্য দলের শক্তি বেশি, সেখানে যেন কংগ্রেস নমনীয় হয়।

কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার মতে, নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরাই আসলে মমতা এবং চন্দ্রশেখর রাওদের মাধ্যমে ফেডারেল ফ্রন্ট তৈরি করে কংগ্রেসের নেতৃত্বে মোদী বিরোধী জোট ভাঙতে মরিয়া। কিন্তু বিজেপিকে পরাস্ত করতে কংগ্রেস চায় মোদী বিরোধী সব শক্তিকে এক মঞ্চে আনতে। সেই লক্ষ্যে আপকে পাশে পাওয়াটা নিঃসন্দেহে কংগ্রেস সভাপতির সাফল্য। তবে আপ নিয়ে আপত্তি রয়েছে কংগ্রেসেই। অজয় মাকেন প্রথম থেকেই আপের সঙ্গে এই বোঝাপড়ার ঘোর বিরোধী। মাকেনের বক্তব্য, আপের শর্ত মেনে নিলে দিল্লির রাজনীতি থেকে তাঁকে অবসর নিতে হবে। এ কথা তিনি রাহুলকেও জানিয়েছিলেন। কেজরীবালের সঙ্গে জোট করার প্রশ্নে আপত্তি রয়েছে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতেরও।

Advertisement

কিন্তু অশোক গহলৌত থেকে আহমেদ পটেলের মতো নেতারা মনে করেন, মোদী বিরোধী রাজনীতিই এখন সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। তার জন্য প্রয়োজনে কেজরীবালের সঙ্গেও হাত মেলানো দরকার। কেজরীবাল ও রাহুলের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, কেজরীবাল আপাতত দু’টি আসন ছাড়তে রাজি হয়েছেন। তবে কংগ্রেস চায় আপ আরও একটি আসন ছাড়ুক। সমঝোতা না করে আসন হারানোর চেয়ে অন্তত তিনটি আসনে জয় সুনিশ্চিত করা অনেক বেশি কৌশলী পদক্ষেপ হবে। দিল্লির পাশাপাশি হরিয়ানা ও পঞ্জাবেও আপের প্রভাব রয়েছে। তাই ওই রাজ্যগুলিতে জোটের সুফল পেতে চাইছে কংগ্রেস।

দিল্লির সাতটি আসনই বর্তমানে বিজেপির দখলে। কংগ্রেস ও আপের মধ্যে যদি জোট হয়, তবেই একমাত্র বিজেপিকে ওই আসনগুলিতে পরাস্ত করা সম্ভব হবে। কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ ও অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচন ও উপনির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে তেমন শিক্ষাই পেয়েছে বিরোধী শিবির। তাই কেজরীবাল বা বিজেপির ধর্নার সমালোচনা করলেও আসন সমঝোতার প্রশ্নে আপের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন