বিজেপিতে গোষ্ঠী সংঘর্ষ বিপ্লব-রাজ্যে

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এটা বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের ফল। এলাকায় কার ক্ষমতা বেশি এবং এলাকা দখল নিয়েই সংঘর্ষ হয়েছে বোধজংনগরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরতলা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৯ ০২:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে ত্রিপুরায় বিরোধীদের উপরে আক্রমণ চলছিলই, এ বার হাঙ্গামা শাসক শিবিরে। বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে গত দু’দিন ধরে গন্ডগোল শুরু হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এরই মধ্যে বোধজংনগর থানা এলাকায় শিবু দাস (২৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনায় শুরু হয়েছে চাপানউতোর। স্থানীয় বিধায়কই স্বীকার করেছেন, দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু সমাজবিরোধী কাজকর্ম চালাচ্ছে। এ সব আর বরদাস্ত করা হবে না। স্থানীয়দের গণরোষেই ওই মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এটা বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের ফল। এলাকায় কার ক্ষমতা বেশি এবং এলাকা দখল নিয়েই সংঘর্ষ হয়েছে বোধজংনগরে। বিজেপির একটি পক্ষের সমর্থিত কিছু দুষ্কৃতী গত কাল শিবুকে বাড়িতে গিয়ে লাঠি-রড দিয়ে পেটাতে থাকে। পুলিশ পৌঁছলে তারা পালিয়ে যায়। অর্ধমৃত শিবুকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। শিবু বিজেপির অন্য একটি গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করতেন।

এলাকার বিধায়ক রতন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘যে কোন মৃত্যুই দুঃখজনক। তবে এরা (শিবুরা) কেউ বিজেপির সমর্থক নয়। এরা আসলে নেশা সামগ্রী বিক্রির সঙ্গে যুক্ত। এলাকার লোক অতিষ্ঠ ছিলেন এবং গত কাল হাতেনাতে ধরে ফেলেন। কয়েক জন পালিয়ে যায় এবং এক জন ধরা পড়ে। এলাকাবাসীর গণপিটুনিতেই এই মৃত্যু হয়েছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভোটের পরে কিছু কিছু সমাজবিরোধী বিজেপির নাম ভাঙিয়ে তাদের কাজকর্ম চালাচ্ছে। এত দিন সহ্য করা হয়েছে। এখন আর এ সব বাড়তে দেওয়া যাবে না। আগামিকাল এলাকায় পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট লোকজনকে নিয়ে বৈঠক করা হবে।’’

Advertisement

বিপ্লব দেবের রাজ্যে লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পরেই বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলের অফিস, সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুর, আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটছে। এ বার কারা আসল বিজেপি, কারা নকল— এই নিয়ে শাসক শিবিরেই হাঙ্গামা বাধায় পুলিশ পড়েছে ফাঁপরে। কাউকে আটক বা গ্রেফতার করলে, হচ্ছে থানা ঘেরাও। হয়েছে পথ অবরোধও।

হিংসা মোকাবিলায় পুলিশ কয়েক জনকে ধরে কোর্টে পাঠিয়েছিল। তাদের সমর্থনে আজ বেশ কিছু মহিলা-পুরুষ আদালত চত্বরে জড়ো হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। বাড়তি পুলিশ এনে তাদের কোর্ট চত্বর থেকে বার করে দেওয়া হয়। ভোটের ফল বেরনোর পরে রাজ্যে হামলা হয়েছে সাংবাদিকদের উপরেও। ত্রিপুরা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন এর নিন্দা করে অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।

কংগ্রেস হিংসার শিকার হওয়া দলীয় সমর্থকদের সাহায্য করতে অর্থ সংগ্রহে নেমেছে। তহবিল গঠনে টাকা দিয়েছেন দলের রাজ্য নেতারা। সাহায্যের আবেদন রাখা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন