গত কাল পর্যন্ত শাসক থেকে বিরোধী, সকলেরই আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ইভিএম। আজ সকালে ইভিএম খুলতেই নরেন্দ্র মোদীর অশ্বমেধের ঘোড়া দৌড়তে থাকে। তাতেই ইভিএম ঘিরে ওঠা যাবতীয় বিতর্ক ধুয়েমুছে সাফ!
অরবিন্দ কেজরীবাল থেকে শরদ পওয়ার, চন্দ্রবাবু নায়ডু থেকে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি— ইভিএমে কারচুপির প্রশ্নে যাঁরা গত কয়েক দিন ধরে সরব ছিলেন, তাঁরাও বিজেপির পক্ষে ওই বিপুল জনাদেশ দেখে ইভিএমের দিকে আঙুল তোলার রাস্তায় যাননি। বিজেপির এই জয়ে সাময়িক ভাবে হলেও মুছে দিল ইভিএম সংক্রান্ত সমস্ত বিতর্ক। এ দিন ১২ হাজার ৪৮০টি ভিভিপ্যাট এবং ইভিএম মিলিয়ে দেখার পর্ব সুষ্ঠু ভাবে উতরে গিয়েছে। একটি মাত্র ভিভিপ্যাটের সংখ্যা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। পরে দেখা যায়, সেটা যন্ত্র নয়, মানুষের ভুল। কমিশন-কর্তারা খুব ভাল করেই জানতেন, সামান্যতম গরমিল হলেই গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাবে। স্বাভাবিক ভাবেই দিনের শেষে স্বস্তিতে নির্বাচন কমিশন। জেতার পরে কমিশনের ভূমিকায় প্রশংসায় সরব হন নরেন্দ্র মোদীও। আর বিরোধীদের কটাক্ষ করে বিজেপি সমর্থকেরা সোশ্যাল মিডিয়ার দেওয়ালে লিখে দেন ইভিএমের নতুন সংজ্ঞা, ‘‘এভরিওয়ান ভোটেড মোদী!’’
চব্বিশ ঘণ্টা আগেও ছবিটি ছিল ভিন্ন। ইভিএম এবং সব ভিভিপ্যাটের স্লিপ মেলানোর দাবি খারিজ করায় কমিশনের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত ছিলেন
একজোট বিরোধী নেতৃত্ব। গণনার আগের রাতে ইভিএমে কারচুপি করতে পারে বিজেপি, এমন আশঙ্কায়
পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্ধ্র, তামিলনাড়ু থেকে মহারাষ্ট্র গণনাকেন্দ্রের সামনে রাত পাহারায় বসেন বিরোধী কর্মী-সমর্থকেরা। সতর্ক নজর রাখা হয় স্ট্রং রুমের উপরে। কিন্তু নাটকীয় কিছুই ঘটেনি। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘আজ গণনার শুরু থেকেই বিজেপি যে ভাবে আসন দখল করছিল, বিরোধীদের কিছু বলার ছিল না।’’
কাল পর্যন্ত ইভিএম প্রশ্নে সরব থাকা এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার আজ বলেন, ‘‘এটা সত্যি ইভিএম নিয়ে সন্দেহ ছিল। কিন্তু ফল বেরোনোর পর আর এ নিয়ে দোষারোপ করে লাভ নেই।’’ এ দিন ইভিএমের দিকে আঙুল তুলতে চাননি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি টুইট করেন, ‘‘বিজয়ীদের অভিনন্দন। তবে সব পরাজিতরাই পরাজিত নয়। আগে গণনা সম্পূর্ণ হোক, ভিভিপ্যাট মিলিয়ে দেখা হোক।’’ পরে এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি মমতা। তবে ঘনিষ্ঠ মহলে এ দিনও ইভিএমের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি।