কুতুব মিনারকে টপকাতে মাত্র আট মিটার দরকার দিল্লির এই আবর্জনার পাহাড়ের!

আর মাত্র আট মিটার। তার পরেই কুতুব মিনারকে ছুঁয়ে ফেলবে গাজিপুরের আবর্জনার পাহাড়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫১
Share:

এত্তা জঞ্জাল: এ ভাবেই পাহাড় জমছে পূর্ব দিল্লির গাজিপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

আর মাত্র আট মিটার। তার পরেই কুতুব মিনারকে ছুঁয়ে ফেলবে গাজিপুরের আবর্জনার পাহাড়।

Advertisement

গাঁধীর দেড়শোতম জন্মবার্ষিকীতে নরেন্দ্র মোদী দেশ জুড়ে আবর্জনা সাফাইয়ের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু খাস দিল্লিতেই প্রশ্ন উঠেছে, সাফাইয়ের পর আবর্জনা জমা হবে কোথায়?

পূর্ব দিল্লির গাজিপুর, উত্তর-পশ্চিম দিল্লির ভলস্বা এবং দক্ষিণ দিল্লির ওখলা— রাজধানীর তিনটি আবর্জনা স্তূপেই আর জঞ্জাল ধারণের ক্ষমতা নেই। তা সত্ত্বেও সেখানে নিত্যদিন জঞ্জাল জমা হচ্ছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা পূর্ব দিল্লির গাজিপুরে।

Advertisement

গাজিপুরে জঞ্জাল জমার শুরু ১৯৮৪ থেকে। ২৯ একর এলাকা জুড়ে ৩৪ বছরে ১ কোটি ৩০ লক্ষ টন জঞ্জাল জমেছে। ২০০২-এই জঞ্জাল ধারণ ক্ষমতা পেরিয়ে যায়। ২০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত জঞ্জাল জমানোর অনুমতি ছিল। ইতিমধ্যেই ৬৫ মিটার উঠে গিয়েছে। বছরে ৫ মিটার উচ্চতা বাড়ছে। রোজ ১,১০০ টন জঞ্জাল সেখানে জমছে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা মার্চ মাসে বলেছিলেন, সে দিন আর দূরে নেই যখন গাজিপুরের আবর্জনার পাহাড় ৭৩ মিটার উঁচু কুতুবের সমান হবে। মাথায় বিমানের পাইলটদের সতর্ক করতে লাল আলো বসাতে হবে। সপ্তাহখানেক আগে সচেতনতা বাড়াতে একদল তরুণ-তরুণী ‘মিশন মাউন্ট গাজিপুর’-এর ডাক দিয়েছিলেন। জঞ্জালের পাহাড়ের নীচে বেস ক্যাম্প তৈরি করে, পাহাড়ে উঠে শৃঙ্গ জয়ের পতাকা পুঁতেছিলেন। তাতেও কারও হুঁশ ফেরেনি।

রবিবার পূর্ব দিল্লির বাসিন্দারা রাস্তায় নেমেছিলেন। দাবি, আবর্জনার পাহাড় সরানো হোক। বন্ধ হোক নতুন করে আবর্জনা ফেলা। এক বছর আগে এই গাজিপুরের পাহাড়েই ধস নেমে জঞ্জালের ধাক্কায় রাস্তার বহু মানুষ পাশের খালে গিয়ে পড়েন। দু’জনের মৃত্যু হয়।

আন্দোলনকারী সংগঠন ‘ওয়াচডগ ইন্ডিয়া’র সভাপতি প্রেমচন্দ্র শর্মা বলেন, ‘‘১৬ বছর আগে যেখানে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল, সেখানে এখনও পাহাড় জমছে। গোটা এলাকার বাতাসে দূষণ ছড়াচ্ছে। মাটির নীচের জলও দূষিত হচ্ছে।’’ পরিবেশবিদদের অভিযোগ, স্থানীয় স্তরে যদি পুরসভাগুলি প্রক্রিয়াকরণজাত আবর্জনা আলাদা করে ফেলত, তা হলে এই সমস্যা হত না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পুনর্ব্যবহারেরও কোনও চেষ্টা নেই।

কিন্তু পাহাড় সরানো কি মুখের কথা? সব পুরসভা বিজেপির দখলে। কংগ্রেসের অভিযোগ, দিল্লির আপ সরকার ও পুরসভাগুলির মধ্যে সমন্বয়ের অভাবই আসল সমস্যা। পূর্ব দিল্লি পুরসভার চিফ ইঞ্জিনিয়ার প্রদীপ খাণ্ডেলওয়ালের যুক্তি, ‘‘উপায় কী? বিকল্প জায়গা মিলছে না। পুরসভার আর্থিক সঙ্কটও চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন