অসম-নাগাল্যান্ড সীমানা বিবাদ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে রিপোর্ট তলব করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মোদীর নির্দেশে আগামী কাল অসমে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী (উত্তর-পূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত) কিরেণ রিজিজু।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ কিন্তু সীমানা বিতর্কে কেন্দ্রের দিকেই তোপ দেগেছেন। নিন্দা করেন নাগাল্যান্ডের। আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমি দায় এড়াতে পারি না। কিন্তু বিতর্কিত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ রাজনাথ সিংহকেও কেন দায়ী করা হবে না?” গগৈয়ের বক্তব্য, ওই এলাকা কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন। সেখানে নিরপেক্ষ বাহিনী হিসেবে সিআরপি মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু, ওই বাহিনী স্থানীয় মানুষ এবং সম্পত্তির রক্ষা করতে পারছে না। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ দিন অসম এবং নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন রাজনাথ। সীমানায় শান্তি ফেরাতে সাহায্যের আশ্বাসও দেন।
এ দিন নয়াদিল্লিতে রিজিজু বলেন, “দু’টি রাজ্য নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে বিবাদ মেটাতে পারে। সীমানায় প্রাণহানি রুখতে তারা ব্যর্থ হওয়ায় কেন্দ্র সিআরপি পাঠিয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। সিআরপি-কে কী ভাবে ব্যবহার করা হবে, তা তারাই ঠিক করে।”
গগৈয়ের বক্তব্য, সীমানা বিতর্ককে কেন্দ্র গুরুত্ব না-দেওয়ার জন্যই হিংসা বেড়েছে। সিআরপি ব্যর্থ হওয়ায় রাজ্য পুলিশও সমস্যায় পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এখানে আফস্পা জারি আছে। পুলিশ সতর্ক ভাবে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে। গোলাঘাটে পুলিশ কঠোর অবস্থান নিলে নিহতের সংখ্যা বাড়ত।” গগৈ জানান, পুলিশি অত্যাচারের প্রমাণ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই অভিযোগেই ১১ নম্বর এপিবিএন-এর কম্যান্ডান্ট গৌতম বরা ও কনস্টেবল দীপক গগৈকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মধ্যস্থতায় নাগাল্যান্ডের পরিষদীয় সচিব পি পাজওয়াং কন্যাকের ব্যক্তিগত সচিব এবং দেহরক্ষী-সহ ৯ জনকে অসমের আদিবাসীদের হাত থেকে মুক্ত করেন সিআরপি জওয়ানরা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর,সীমানার পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি বৈঠক করে নাগাল্যান্ড মন্ত্রিসভা। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াই প্যাটন, নাগা জঙ্গি সংগঠনগুলিকে সংযত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, দু’রাজ্যের সীমানা সংলগ্ন ওই এলাকা নাগাল্যান্ডের ওখা জেলার অন্তর্গত। তৃতীয় পক্ষ সেখানে ঝামেলা ছড়াচ্ছে। গোলাঘাটে হিংসা অব্যাহত। কাল বিক্ষোভকারীদের উপরে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে অনির্দিষ্ট কালের গোলাঘাট বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। একই কারণে কাল আটটি সংগঠন অসম বন্ধ ডেকেছে। এ দিন গোলাঘাটে এরেঙাপাড়া থানায় হামলা চালায় ক্ষিপ্ত জনতা। পুলিশের গুলিতে দু’জনের মৃত্যু হয়। বন্ধ সমর্থকরা পথ অবরোধ করে। গোলাঘাটে অবরোধ তুলতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুুলিশ, আধাসেনা।