tribute

পাগলা সানাইয়ের সুরে বিসমিল্লার জন্মদিন

১৯১৬-র ২১ মার্চ বিহারের ডুমরাওতে জন্ম বিসমিল্লার। দাদা সামসুদ্দিনের সঙ্গে মিলিয়ে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল কামরুদ্দিন। কিন্তু, বিসমিল্লার আড়ালে সে শব্দ কবেই ঢাকা পড়ে গিয়েছিল!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ১৫:৩১
Share:

ফের নাতি হওয়ার খবরটা পেয়েই ঠাকুরদাদা বলে উঠেছিলেন, ‘বিসমিল্লা’! সেই শব্দেই গোটা দুনিয়া যে তাঁর নাতিকে চিনবে, তা তখন ভাবেননি ভোজপুরের রাজার ডুমরাও প্রাসাদের ওই সভাসঙ্গীতকার। বুধবার সেই ‘বিসমিল্লা’র ১০২তম জন্মদিন। শ্রদ্ধা জানাতে গুগলের ডুডলেও আজ উস্তাদ বিসমিল্লা খান।

Advertisement

১৯১৬-র ২১ মার্চ বিহারের ডুমরাওতে জন্ম বিসমিল্লার। দাদা সামসুদ্দিনের সঙ্গে মিলিয়ে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল কামরুদ্দিন। কিন্তু, বিসমিল্লার আড়ালে সে শব্দ কবেই ঢাকা পড়ে গিয়েছিল! বাবা পয়গম্বর বক্স খান ছিলেন ভোজপুরের রাজার ডুমরাও প্রাসাদে সভাসঙ্গীতকার। ঠাকুরদা ও তাঁর বাবাও ছিলেন সেখানকার সঙ্গীতকার। সানাইয়ের মতো একটি লোকশিল্পে প্রচলিত ‘সাধারণ’ যন্ত্রকে মার্গসঙ্গীতের স্তরে উন্নীত করে পূর্ণ অবয়ব দেওয়ায় উস্তাদ বিসমিল্লার অবদান সর্বজনস্বীকৃত। গোটা দুনিয়ায় সানাই আর বিসমিল্লা একেবারেই সমার্থক।

পণ্ডিত রবিশঙ্কর এবং এম এস শুভলক্ষ্মীর পর তৃতীয় ‘ভারতরত্ন’ বিসমিল্লা। এ ছাড়া পদ্মবিভূষণ, সঙ্গীত নাটক অকাদেমি ও তানসেন সম্মানেও অলঙ্কৃত হয়েছেন তিনি। নিজে অলঙ্কৃত করেছেন ভারতীয় মার্গসঙ্গীতকে। তিনি নিজে বলতেন, ‘বিভিন্ন ঘরানা থেকে ফুল তুলে এনে আমার সানাইয়ে ভরে দিই। তৈরি হয় গুলদস্তা।’

Advertisement

আরও পড়ুন: বার্থ ডে স্পেশাল: রানির বিয়েতে কত জন নিমন্ত্রিত ছিল জানেন!

সম্প্রীতি এবং সহিষ্ণুতার এক অনন্য উদাহরণ ছিলেন বিসমিল্লা। প্রতিটি অনুষ্ঠানে ‘রঘুপতি রাঘব’ অবধারিত ছিল। রাধাকৃষ্ণের লীলা পরিবেশন করতে করতে তিনি বলতেন, ‘বাজাতে বাজাতে মনটা আমার বৃন্দাবনে চলে যায়।’ সঙ্গীত, সুরের সেই পরিবেশন তখন আর শুধু পারফরম্যান্স থাকত না, হয়ে উঠত মানবদর্শন। সকালে রোজ গঙ্গাস্নান করতেন। দিনে পাঁচ বার নমাজ পড়তেন। তার পর সন্ধ্যায় রোজ বালাজি মন্দিরের চাতালে রেওয়াজ করতেন। কখনও দাঁড়িয়ে সানাই বাজাতেন না। শুধু বছরে এক দিন। মহরমের দিন। ওই একটা দিন তিনি রাস্তায় বেরিয়ে কোনও রাগ বাজাতেন না, বাজাতেন বিলাতগীতি নৌহা।

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এক বার প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কুচকাওয়াজে অংশ নিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে সানাই বাজিয়েছিলেন প্রজাতন্ত্র দিবসের জন্য। পরে বিসমিল্লা বলেছিলেন, নমাজই বলো আর ভজন, সবই তো আসলে সা-রে-গা-মা-পা-ধা-নি, এই সুরে বাঁধা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন