রাজ্যপালের কাছে সরকার গড়ার আর্জি জানিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি ইয়েদুরাপ্পা। ছবি: পিটিআই।
কর্নাটকের জল গড়াল সুপ্রিম কোর্টে। দিনভর নাটকে যবনিকা পড়ল না গভীর রাতেও।
বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বি এস ইয়েদুরাপ্পাকে বুধবার রাত ৯টায় চিঠি পাঠালেন কর্নাটকের রাজ্যপাল বজুভাই বালা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ন’টায় শপথগ্রহণ করতে বলে। তার এক ঘণ্টার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কংগ্রেস এবং জেডি (এস)। আর্জি দ্বিবিধ। এক, আগামিকালের শপথগ্রহণের উপরে স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। দুই, গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ইয়েদুরাপ্পাকে যে ১৫ দিন সময় রাজ্যপাল দিয়েছেন, তা কমানো হোক। আর্জির গুরুত্ব বিবেচনা করে রাতেই শুনানিতে রাজি হয় শীর্ষ আদালত। রাত দেড়টা নাগাদ আদালতে আসেন তিন বিচারপতি অর্জনকুমার সিক্রি, শরদ অরবিন্দ বোবদে ও অভয় মনোহর সাপ্রে।
ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির আগের রাতে কার্যত নজিরবিহীন ভাবে তালা খুলেছিল সুপ্রিম কোর্টের। শুনানি চলেছিল ভোর রাত পর্যন্ত। আজ শুনানি শুরু হয় রাত পৌনে দু’টোয়। কংগ্রেসের পক্ষে সওয়াল করেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্যপালের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। কাগজ ছাপতে যাওয়া পর্যন্ত কোর্টের সিদ্ধান্ত জানা যায়নি।
ইয়েদুরাপ্পা অবশ্য বৃহস্পতিবার শপথ নিতে মরিয়া ছিলেন। কারণ, জ্যোতিষীর মতে সেটা শুভদিন। তাই স্টেডিয়াম পর্যন্ত বুক করে রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি ডাক পাবেন কি না, তা নিয়ে টানাপড়েন চলে রাত পর্যন্ত।
ইয়েদুরাপ্পাকে শপথ নিতে ডাকার খবর পেয়েই কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম, কপিল সিব্বলরা দিল্লিতে বলেন, ‘‘কোন এক্তিয়ারে রাজ্যপাল এই কাজ করেন? যখন আজই কংগ্রেস-জেডি (এস)-সহ মোট ১১৭ জন বিধায়কের সমর্থনপত্র তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে! ইয়েদুরাপ্পাকে আমন্ত্রণ জানানো মানে দল ভাঙাকে প্রশ্রয় দেওয়া! কার ইশারায় রাজ্যপাল কাজ করছেন? বিধায়কদের সশরীরে হাজির করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যপাল মানেননি।’’
এর আগে জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী জেডি (এস)-এর কুমারস্বামী অভিযোগ করেন, তাঁদের বিধায়কদের ১০০ কোটি টাকা করে দিতে চাইছে বিজেপি। কংগ্রেসের অনেক বিধায়কও বলেন, ফোন আসছে। বিজেপি মুখে বলছে, ঘোড়া কেনাবেচা তাদের ‘সংস্কৃতি’ নয়। কিন্তু ঘরোয়া মহলে দাবি করছে, সংখ্যা জোগাড় হয়ে যাবে। নির্দল এক প্রার্থী গোড়ায় বিজেপিকে সমর্থন করবেন বলেন। দুপুরে তিনি কংগ্রেসের সঙ্গে। রাতে ফের বিজেপি অফিসে!
কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, বিজেপির ৬ বিধায়ক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আর নিজেদের বিধায়কদের হোটেলে ‘বন্দি’ রেখেছে কংগ্রেস-জেডি (এস)।