বড় ধাক্কা দিল কংগ্রেস

বিএ হল বারো, যোগ্যতায় জল ইয়েদুরাপ্পারও!

বিজেপির দাবি, ভোটের মুখে এ সব অবান্তর বিবাদ বাধানোর চেষ্টা। হারের ভয়ে মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা মাত্র। গত লোকসভা নির্বাচনে ইয়েদুরাপ্পা হলফনামায় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যা জানিয়েছিলেন, এ বারেও তাতেই কায়েম রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০৩:২৩
Share:

ছিলেন বিএ পাশ, হলেন বারো পাশ! পাঁচ বছরের ব্যবধানে কমে গেল শিক্ষাগত যোগ্যতা! যাঁর তাঁর নয়। খোদ নরেন্দ্র মোদীর দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর।

Advertisement

তাঁর দুর্নীতি-যোগ নিয়ে প্রশ্ন ছিল আগে থেকেই। কর্নাটকে ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে রাজ্যে বিজেপির মুখ ইয়েদুরাপ্পার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও শোরগোল ফেলে দিল কংগ্রেস। তাদের দাবি, পাঁচ বছর আগে ইয়েদুরাপ্পা ভোটের হলফনামায় লিখেছিলেন, তাঁর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা কলা বিভাগে স্নাতক। বেঙ্গালুরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করেছেন। কিন্তু এ বারে? ইয়েদুরাপ্পার হলফনামা বলছে, তিনি দ্বাদশ শ্রেণির কোঠা পেরিয়েছেন মাত্র। পাঁচ বছরে কী করে কমে গেল শিক্ষাগত যোগ্যতা?

বিজেপির দাবি, ভোটের মুখে এ সব অবান্তর বিবাদ বাধানোর চেষ্টা। হারের ভয়ে মানুষের নজর ঘোরানোর চেষ্টা মাত্র। গত লোকসভা নির্বাচনে ইয়েদুরাপ্পা হলফনামায় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে যা জানিয়েছিলেন, এ বারেও তাতেই কায়েম রয়েছেন। কংগ্রেসের দাবি যে অসত্য নয়, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটেই তার প্রমাণ মিলেছে। ফলে ভোটের ফল যা-ই হোক, বিজেপি বিতর্কটা উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও আগামী দিনে কংগ্রেসের বড় অস্ত্র হয়ে উঠবে এটি।

Advertisement

কংগ্রেস এখন এই প্রশ্নও তুলছে, বারবার কেন শুধু বিজেপি নেতাদেরই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে গোল বাধে? নরেন্দ্র মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে লেখেন, গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ‘দ্বিতীয় বর্ষ’। আর খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। নিজে লেখেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। কিন্তু তাঁর ডিগ্রি ভুয়ো বলে দিল্লি থেকে গুজরাত বিশ্ববিদ্যালয়ে হানা দিয়েছিলেন অরবিন্দ কেজরীবাল। অনেক বিতর্কের পর অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, প্রধানমন্ত্রীর ডিগ্রিতে জল নেই। শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, তাঁর মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার এক দিন পর থেকেই হইচই বাধে সেই সময়ের শিক্ষামন্ত্রীর শিক্ষা নিয়ে। স্মৃতি ইরানিকে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী করতেই বিরোধীরা বলতে থাকেন, দেশের শিক্ষামন্ত্রীই স্নাতক নন। পুঁথিগত শিক্ষা না থাকলে ভাল মন্ত্রী হওয়া যায় না, এমন নয়। কিন্তু মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, নরুল হাসান, কে সি পন্থ, কর্ণ সিংহের মতো শিক্ষামন্ত্রীদের উত্তরসূরি হিসেবে পদের মান তো বজায় রাখা উচিত!

ইয়েদুরাপ্পার মতো স্মৃতির বিরুদ্ধেও দু’বার দু’রকম হলফনামা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। ২০০৪ সালে লোকসভা নির্বাচনের সময় স্মৃতি জানিয়েছিলেন তিনি বিএ পাশ। দশ বছর পর জানান, বাণিজ্য শাখায় ‘পার্ট ওয়ান’। পরে আবার দাবি করেন, তিনি আমেরিকার ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। স্মৃতিকে অবশ্য পরে মানবসম্পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এখন তিনি তথ্য-সম্প্রচার ও বস্ত্র মন্ত্রকের দায়িত্বে। রাজ্যসভার ওয়েবসাইটে এখন তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে লেখা আছে, দিল্লির হোলি চাইল্ড অগজ়িলিয়াম ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব করেসপন্ডেন্স অ্যান্ড কন্টিনিউয়িং এডুকেশন থেকে পড়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন