বিয়ের পর সবে তখন নববধূর পাশে বসেছেন বর। ছবি: সংগৃহীত।
সবে সাতপাক শেষ হয়েছে। পাশাপাশি বসে বর-কনে। তাঁদের ঘিরে পাত্র ও কনেপক্ষের কমবয়সি ছেলে-মেয়ে। হঠাৎ ছন্দপতন। থেমে গেল গানবাজনা। কিছু বুঝে ওঠার আগে মারপিট শুরু। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে বরকে মণ্ডপ থেকে তুলে নিয়ে চলে গেল নর্তকের দল। অসহায় কনে তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়। বিয়েবাড়ি জুড়ে শুরু হল চিৎকার-চেঁচামেচি। ঘটনাস্থল বিহারের গোপালগঞ্জ জেলার দিঘওয়া দুবৌলি গ্রাম। অভিযোগ, পারিশ্রমিক নিয়ে পাত্রপক্ষের সঙ্গে বচসার জেরে বরকেই অপহরণ করে ভাড়াটে নর্তকের দল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে। অপহৃত পাত্রের নাম সোনুকুমার শর্মা। রাতে বিয়ের মণ্ডপ থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে চলে যান নর্তকেরা। পরিবারের অভিযোগ, তার আগে বিয়েবাড়ির চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে নর্তকের দল। এমনকি, মারধর করা হয় কনেকেও। কয়েক জনের গয়নাগাটি ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বরকে উদ্ধারের জন্য রাতেই পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, পাত্র কিংবা কনেপক্ষের কারও কাছে মার খান মুস্কান কিন্নর নামে এক নৃত্যশিল্পী। তিনি ফোন করে দলের বাকিদের ডাকেন। তার পরে গন্ডগোল চরম আকার নেয়। ভাঙচুর চলে বিয়ের মণ্ডপে। অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় বরকে। শুক্রবার রাত থেকে প্রায় ন’ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পরে বরের খোঁজ পায় পুলিশ। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ সিবান জেলার একটি নির্জন স্থান থেকে উদ্ধার করা হয় অপহৃতকে। শারীরিক পরীক্ষা করার পরে সোনুকে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয় পুলিশ। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার অধেষ দীক্ষিত বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়া মাত্র অপহৃত বরকে উদ্ধার করতে নামে পুলিশ। সুস্থ ভাবেই তাঁকে উদ্ধার করা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, মূলত টাকা নিয়ে বরপক্ষ এবং নাচের দলের সঙ্গে অশান্তি হয়েছিল।’’ তদন্তকারী এক অফিসার জানান, অভিযোগ অনুযায়ী, বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে সবে মণ্ডপে বসেছিলেন বর। নৈশভোজের পরে অতিথিরা নাচের অনুষ্ঠান দেখছিলেন। নর্তকেরা একটা সময় নাচ বন্ধ করে দেন। কিন্তু তাদের নাচের জন্য পিড়াপিড়ি করছিলেন অতিথিরা। এই নিয়ে গোলমাল শুরু হয়। মারপিট করে দুই পক্ষ।
বরকে উদ্ধার করার পরে শনিবার রাতে বিয়ের বাকি অনুষ্ঠান ভালয় ভালয় মিটেছে। কিন্তু শুক্রবার রাত ভুলতে পারছেন না পাত্র বা কনে, কোনও পক্ষই।