জিএসটি নিয়ে ধুন্ধুমার কাশ্মীরে

জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় দু’টি কক্ষ। আজ দু’টি কক্ষে জিএসটি প্রস্তাব পেশ করে অর্থমন্ত্রী হাসিব দ্রাবু বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ আর্থিক স্বাধিকার রক্ষা করেই জিএসটি চালু করা প্রয়োজন। তার জন্য আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে হবে।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৭ ০৪:০৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিধানসভায় জিএসটি সংক্রান্ত প্রস্তাব এনেই কড়া বিরোধিতার মুখে পড়ল মেহবুবা মুফতি সরকার। এক দিকে বিধানসভায় ধ্বস্তাধ্বস্তিতে জড়িয়ে পড়লেন শাসক ও বিরোধী সদস্যেরা। অন্য দিকে জিএসটি-র বিরোধিতায় পথে নামলেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।

Advertisement

জিএসটি চালু হলে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ আর্থিক স্বাধিকারে হাত পড়বে বলে দাবি বিরোধীদের। মতবিরোধ মেটাতে বেশ কয়েক বার সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে মেহবুবা সরকার। কিন্তু তাতেও সমস্যা যে মেটেনি আজ তার প্রমাণ মিলল হাতেনাতে। জিএসটি বিতর্ককে ছাপিয়ে কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও উত্তপ্ত হয়ে উঠল বিধানসভা।

জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় দু’টি কক্ষ। আজ দু’টি কক্ষে জিএসটি প্রস্তাব পেশ করে অর্থমন্ত্রী হাসিব দ্রাবু বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ আর্থিক স্বাধিকার রক্ষা করেই জিএসটি চালু করা প্রয়োজন। তার জন্য আইনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে হবে। এই বিষয়ে বিরোধী সদস্যেরাও সরকারকে সাহায্য করতে পারেন।’’ উচ্চকক্ষে আলোচনার সময়ে নির্দল সদস্য ইঞ্জিনিয়ার রশিদ উঠে চিৎকার করতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীর সমস্যার আগে সমাধান করতে হবে।’’ রশিদ বার বার আলোচনায় বাধা দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন শাসক দল পিডিপি-র বিধায়ক জাভেদ হাসান। তিনি বলেন, ‘‘স্পিকার দুর্বল। তাই আপনি এ ভাবে সভার কাজে বাধা দিতে পারছেন।’’

Advertisement

সঙ্গে সঙ্গে লাফিয়ে ওঠেন ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং কংগ্রেসের সদস্যেরা। জাভেদ হাসান স্পিকারকে অপমান করেছেন বলে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। বিজেপি সদস্যরা রশিদকে ক্ষমা চাইতে বলেন। রশিদ তাতে রাজি হননি। ফলে গোলমাল বাড়ে। ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। স্পিকার কবীন্দ্র গুপ্ত রশিদকে সরিয়ে দিতে মার্শালদের নির্দেশ দেন। ধাক্কাধাক্কির পরে এক মার্শালও অসুস্থ হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত ন্যাশনাল কনফারেন্সের বাধায় রশিদকে সরানো যায়নি। স্পিকার সভা মুলতুবি করে দেন।

নিম্নকক্ষেও বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন ন্যাশনাল কনফারেন্স এবং পিডিপি সদস্যেরা। ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা দেবেন্দ্র সিংহ রানা বলেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীর এবং ভারতের ধারণাকে আক্রমণ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা খুব জটিল সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি।’’ সঙ্গে সঙ্গেই পিডিপি-র মন্ত্রী ইমরান আনসারি বলতে
শুরু করেন, ‘‘আপনি থামুন তো। নিজের জ্যামক্যাশ ভেহিকলেডস কোম্পানির জন্য তো এর মধ্যেই জিএসটি দিয়েছেন।’’ দেবেন্দ্র রানা পাল্টা বলেন, ‘‘আমি আপনার মতো কর ফাঁকি দিই না।’’ এর পরেই প্রবল শোরগোল শুরু হয়। তার মধ্যেই শোনা যায় আনসারি দেবেন্দ্রকে চেঁচিয়ে বলছেন, ‘‘আপনাকে পিটিয়ে খুন করতে পারি এ কথা মনে রাখবেন। আপনার সব কুকীর্তির খবর আমার জানা আছে।’’

বিধানসভায় হইচইয়ের পাশাপাশি আজ জিএসটি-র বিরুদ্ধে পথে নামেন রাজ্যের ব্যবসায়ীদের একাংশও। বিধানসভার কাছে ধর্নায় বসার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। কিন্তু মিছিল করে জাহাঙ্গির চক থেকে সচিবালয়ের কাছে আসার পরেই তাঁদের আটক করে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন