বিরোধী-শূন্য সংসদে প্রস্তুতি মোদী উৎসবের

বিরোধীরা নেই। তাতে কী? ইতিহাসে জায়গা করে নেওয়ার কৌশল ভালই জানেন মোদী। সংসদের এই সেন্ট্রাল হলে মধ্যরাতে এর আগে তিন বার অনুষ্ঠান হয়েছে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা প্রাপ্তির দিন, ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার ২৫ বছরে এবং ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০৪:২৭
Share:

ফাইল চিত্র।

সেজে উঠেছে সংসদ। মির্জাপুর থেকে আসা দেড়শো তাঁতি বুনেছেন নতুন কার্পেট। এসেছে নতুন দামি হেডফোন, সাউন্ড সিস্টেম। চলছে ঘন ঘন মহড়া।

Advertisement

শুক্রবার রাত বারোটা বাজলেই সংসদের সেন্ট্রাল হলে ঘণ্টা বাজিয়ে জিএসটি চালু করবেন প্রধানমন্ত্রী।

বিরোধীরা নেই। তাতে কী? ইতিহাসে জায়গা করে নেওয়ার কৌশল ভালই জানেন মোদী। সংসদের এই সেন্ট্রাল হলে মধ্যরাতে এর আগে তিন বার অনুষ্ঠান হয়েছে। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা প্রাপ্তির দিন, ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার ২৫ বছরে এবং ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছরে। তাই বিরোধীরা না এলেও শুক্রবার মধ্যরাতকে তারকা সমাবেশ ঘটিয়ে এক চোখধাঁধানো ইভেন্টে পরিণত করতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

জিএসটি প্রচারের জন্য অমিতাভ বচ্চনের বিজ্ঞাপন বেশ কয়েক দিন ধরেই চলছে টেলিভিশনের পর্দায়। আমন্ত্রিতদের তালিকায় সর্বাগ্রে রয়েছে তাঁর নাম। সঙ্গে লতা মুঙ্গেশকর, যিনি প্রায়ই মোদীর প্রশংসা করেন। ১৯৯৭ সালে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এই সেন্ট্রাল হলেই তিনি গেয়েছিলেন, ‘সারে জাঁহাসে আচ্ছা’। অসুস্থতার কারণে তাঁর এ বারে থাকা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আমন্ত্রিতের তালিকায় আছেন রতন টাটা, ‘মেট্রোম্যান’ ই শ্রীধরণ, কুলভূষণের আইনজীবী হরিশ সালভে, এম এস স্বামীনাথনের মতো অনেকে। থাকবেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বর্তমান ও প্রাক্তন গভর্নর, বণিকসভার প্রতিনিধিরা। এবং অতি অবশ্যই আরএসএস-ঘনিষ্ঠ এস গুরুমূর্তির মতো অনেকে।

আশি মিনিটের অনুষ্ঠানে ১০ মিনিটের একটি ছবি দেখানো হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা, তার পরেই প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা। রাত বারোটা বাজলেই জিএসটি শুরুর ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রীর।

আমন্ত্রিতদের তালিকা শুনে কংগ্রেসের এক নেতার মন্তব্য, ‘‘সংসদের সেন্ট্রাল হলে যখন যৌথ অধিবেশন হয়, তখন লোকসভা আর রাজ্যসভার সাংসদরা এলেই তা ভরে যায়। বিরোধীরা না হয় শেষ মুহূর্তে বয়কটের কথা জানিয়েছে। কিন্তু আমন্ত্রণ তো সকলেরই ছিল। এখন আমন্ত্রিতের তালিকা শুনে মনে হচ্ছে, সরকার চাইছিল বিরোধীরা না আসুক! তাতে মোদীর পক্ষে ঢাক পেটানো আরও সহজ হবে।’’ কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী? নিজের প্রচারকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছেন, যাতে জিএসটির মানেই বদলে যাচ্ছে! জিএসটি মানে এখন ‘গ্র্যান্ড সেল্ফ-প্রোমোটিং তামাশা’!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন