মন্দিরে ডিম! কাঠগড়ায় পোকেমন

দাদরি হত্যাকাণ্ড থেকে রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা— ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে বারবার উঠে আসছে অসহিষ্ণুতার চেনা চেহারাটাই। এ বার তার আঁচ এসে লাগল মোবাইল গেমের গায়ে!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আমদাবাদ শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫২
Share:

দাদরি হত্যাকাণ্ড থেকে রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা— ভারতের সাম্প্রতিক ইতিহাসে বারবার উঠে আসছে অসহিষ্ণুতার চেনা চেহারাটাই। এ বার তার আঁচ এসে লাগল মোবাইল গেমের গায়ে!

Advertisement

পোকেমন গো।

মোবাইল গেমের জগতে অল্প কয়েক দিনের মধ্যে প্রবল জনপ্রিয়তার শিখর ছুঁয়েছে খেলাটি। ‘চারমেলিয়ন’ কিংবা ‘পিকাচু’ এই সব ‘পোকেমন’ বা পকেট মনস্টারকে ধরতে পথে নেমেছেন গোটা দুনিয়ার অসংখ্য ‘খেলোয়াড়’। পিছিয়ে নেই ভারতও।

Advertisement

হিন্দু এবং জৈনদের ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করছে খেলাটি, এই অভিযোগ এনে এ বার পোকেমন গো খেলার নির্মাতা এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারকে নোটিস পাঠাল গুজরাত হাইকোর্ট।

পোকেমন গো খেলাটিতে এমন একটি ভার্চুয়াল দুনিয়া সাজানো হয়, যা দেখতে আসলের মতোই। সেখানে মোবাইল জিপিএস এবং ক্যামেরা ব্যবহার করে আমাদের আশপাশের এলাকার প্রতিচ্ছবি গেমের মধ্যেই সাজিয়ে দেওয়া হয়। পোকেমনদের ধরার জন্য খেলার মধ্যে থাকে বেশ কিছু ভার্চুয়াল ডিম, আর সেগুলো ফাটার পরই এক জন খেলোয়াড় তার সংগ্রহে নতুন পোকেমনটিকে যুক্ত করতে পারেন।

সেই ভা়র্চুয়াল ডিম ঘিরেই এ বার তীব্র হয়েছে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা। যে-হেতু ক্যামেরা ও জিপিএস ব্যবহার করে এলাকার ম্যাপ খেলায় হাজির করা হয়েছে, তাই সেই তালিকা থেকে বাদ পড়ছে না এলাকার ধর্মস্থানও। ভার্চুয়াল হলেও ধর্মস্থানে ডিমের মতো আমিষ বস্তু ফাটানোয় হিন্দু ও জৈনদের মতো বেশ কিছু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগকে আঘাত করছে বলে দাবি করে সম্প্রতি গুজরাত হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন কয়েক জন। খেলাটিকে নিষিদ্ধ করারও দাবি জানানো হয়। সেই জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতেই বুধবার খেলাটির নির্মাতা নিনাটিক ইঙ্ক, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রককে নোটিস পাঠিয়েছে গুজরাত হাইকোর্ট। চার সপ্তাহ পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে বলে জানান আবেদনকারীর আইনজীবী আলয় অনিল দাভে।

আদালতের এই পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াকে নয়া রঙ্গ-তামাশার খোরাক জুটিয়েছে। কেউ বা টুইট করে বলেছেন, ‘‘শুয়োর দেখিয়ে কোনও ধর্মকে আঘাত করা হচ্ছে— এই অভিযোগ এনে এ বার কি ‘অ্যাংগ্রি বার্ড’ খেলাটিকে নিষিদ্ধ করা হবে?’’ কারও বক্তব্য, ‘‘আদালতে বছর বছর ধরে লক্ষ লক্ষ মামলা জমা হয়। সেগুলোর কথা ভুলে বিচারপতি কি এ বার পোকেমনকে তাড়া করতে নেমে পড়লেন!’’

পোকেমন গো-র নিমার্তা সংস্থা নিনাটিক ইঙ্ক-ই বা আদালতের নোটিসের উত্তর দিতে কতটা বাধ্য তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। সংস্থাটির সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ভারতে আনুষ্ঠানিক ভাবে খেলাটিকে আনেনি নিনাটিক ইঙ্ক। কিন্তু ভারতে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে পোকেমন গো। অন্য দেশের আই-টিউনস অ্যাকাউন্টে লগ ইন করে ভারতীয় ফোন থেকে খেলা যাচ্ছে এই গেম। এই পরিস্থিতিতে ভারতে খেলাটি ছড়ানোর জন্য নিনাটিক ইঙ্ক সংস্থাটিকেই বা কতটা দায়ী করা যেতে পারে তা-ও খতিয়ে দেখার বিষয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন