বানভাসি। বৃষ্টির পর গুয়াহাটির অনিল নগরে। বৃহস্পতিবার উজ্জ্বল দেবের তোলা ছবি।
টানা বৃষ্টিতে অসমের বন্যা পরিস্থিতি ফের সঙ্কটজনক। বন্যায় ডুবেছে গুয়াহাটিও। ফুঁসছে শহর লাগোয়া ব্রহ্মপুত্র। গত রাতের বৃষ্টিতে গুয়াহাটির যে সব এলাকায় আগে জল জমত না, সেখানেও এক হাঁটু জল জমে যায়। অনেক রাস্তায় থমকে যায় যান চলাচল। কয়েকটি জায়গায় ইদগাহে জল জমে যাওয়ায় ইদের নামাজ পড়া হয় মসজিদ চত্বরে।
গত রাতে বৃষ্টির সময় জোড়াবাট এলাকার ১১ মাইলে ভেটেরনারি ডিসপেনসারি ক্যাম্প এলাকায় পাহাড়ের ধারে থাকা একটি বাড়ির দেওয়াল ধসে কটি কাঁচা বাড়ির উপরে ভেঙে পড়লে গোটা পরিবার চাপা পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ১০ বছরের বিশাল শর্মা ও তার দিদি কিরণ শর্মা (১৩)। তাঁদের মা রাধা শর্মা ও বোন পূজা শর্মাকে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
বৃষ্টিতে সব চেয়ে শোচনীয় অবস্থা অনিল নগর, নবীন নগর, জু রোডের। সেই সঙ্গে মালিগাঁও, পাঞ্জাবাড়ি, ডাউন টাউন, মথুরানগর, বিটি কলেজ, লাচিত নগর, আর জি বরুয়া রোড, দিসপুর, সার্ভে, জুরিপার, হাতিগাঁওয়ের অনেক এলাকায় জল জমে। জল জমেছে কাহিলীপাড়া, ভিআইপি রোডেও। অনিল নগরে ভরলু নদীর গার্ড-ওয়াল পার করে রাস্তায় ভাসিয়ে দেয় জলের স্রোত।
মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল মুখ্যসচিব, জেলাশাসক ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে শহরের বন্যাকবলিত এলাকায় গিয়ে মানুষকে সাহায্য করার নির্দেশ দেন।
রাজ্যের ৯টি জেলা আপাতত বন্যা কবলিত। সেগুলি হল লখিমপুর, ধেমাজি, মাজুলি, যোরহাট, গোলাঘাট, নগাঁও, মরিগাঁও, বিশ্বনাথ ও বরপেটা। নগাঁও জেলার সামাগুড়ির তিন নম্বর ভুরবান্ধায় বাঁধ ভেঙে নদীর জল ঢুকে লাউখোয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা ভাসিয়ে দিয়েছে। প্রশাসনিক হিসেবে, বন্যাকবলিতের সংখ্যা এক লক্ষ ৫২ হাজার ৯৭৭ জন।
অরুণাচলের বিভিন্ন এলাকাও বৃষ্টি, ধস, বন্যায় বিচ্ছিন্ন। বিশেষ করে আপার সুবনসিরি জেলার অনেক অংশ ধসের জেরে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাকি দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন। লিমকেং, টাকসিং, নাচো ও সিয়ুমে খাবারের চরম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওষুধের অভাবে সব পাবলিক হেল্থ সেন্টার বন্ধ। দাপোরিজু থেকে অন্যত্র যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ। গ্রামে আসা ছাত্র ও চাকুরজীবিরা স্কুল বা অফিসে ফিরতে পারছেন না। টানা বৃষ্টিতে বিআরও চেষ্টা করেও ধস সরিয়ে রাস্তা তৈরি করতে পারছে না।