National news

রথযাত্রা শুরু অখিলেশের, দেখে নিন কেমন সেই মার্সিডিজ রথ

সে এক সময় ছিল। রাজ-রাজারা রথ ছুটিয়ে সাম্রাজ্য চষে বেড়াতেন। প্রজাদের খবর নিতেন। সেই সাম্রাজ্যও নেই, রাজাও নেই। কিন্তু রথ ছুটিয়ে রাজ্যের পরিক্রমা একালেও হয়। যদিও সেকাল আর একালের রথে বিস্তর ফারাক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৬ ২০:০৭
Share:

অখিলেশের সেই রথ।

সে এক সময় ছিল। রাজ-রাজারা রথ ছুটিয়ে সাম্রাজ্য চষে বেড়াতেন। প্রজাদের খবর নিতেন। সেই সাম্রাজ্যও নেই, রাজাও নেই। কিন্তু রথ ছুটিয়ে রাজ্যের পরিক্রমা একালেও হয়। যদিও সেকাল আর একালের রথে বিস্তর ফারাক। এ কালের রথ হার মানিয়ে দেবে হাই প্রোফাইল গাড়িকেও। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের রথের কথাই ধরা যাক। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে বানানো হয়েছে সেই রথ। কী রকম?

Advertisement

রোজকার জীবনযাপনের সবটাই মিলবে রথের ভিতরে। ১০ চাকার সেই রথ আসলে উন্নত প্রযুক্তির মার্সিডিজ বাস। না, একবার ভিতরে ঢুকলে অবশ্য বোঝার উপায় নেই তা বাস কি না। ঠিক যেন কোনও পাঁচতারা হোটেলের রুম। সোফা, ফ্রিজ, টিভি, আলমারি কী নেই ভিতরে! তবে উদ্দেশ্য যখন রাজ্য পরিক্রমা, সেখানে কি আর শুধু গায়ে ঠাণ্ডা হাওয়া লাগালে চলে! সফরের মাঝে প্রজাদের খোঁজখবরও নিতে হবে যে। তার ব্যবস্থাও রয়েছে। রথে লাগানো রয়েছে হাইড্রোলিক লিফট‌্। ভাষণ দেওয়ার প্রয়োজন হলেই তর তর করে খুলে যাবে সেই লিফট‌্। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়ির ছাদ ফুঁড়ে উপরে উঠে আসবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণের পর অটোমেটিক লিফট‌্ গুটিয়ে আবার রথের ভিতরে স্বস্থানে ফিরেও যাবেন। আর ভাষণ দিতে দিতে গলা শুকিয়ে গেলে? আগে থেকেই প্রস্তুত ফ্রিজের ঠাণ্ডা জল। রয়েছে খিদে মেটানোর ব্যবস্থাও। ড্রাইফ্রুট, রেডিমেড খাবার থেকে শুরু করে রান্নার সরঞ্জাম— সবই রয়েছে সেই রথে। ঠিক যেমনটি চাই তেমনটি খাবারই হাজির হয়ে যাবে একপাশে রাখা খাবার টেবিলে।


এই সিটেই বসেন অখিলেশ।

Advertisement

আগাগোড়া বুলেট প্রুফ এই রথ দুটো ভাগে বিভক্ত। একটি অংশ বরাদ্দ মিটিংয়ের জন্য। পাঁট থেকে ছয় জনকে নিয়ে সেখানে জরুরি বৈঠক সেরে ফেলতে পারবেন তিনি। আর একটি অংশে রয়েছে রান্নাঘর, স্নানাগার, এবং বিনোদনের ব্যবস্থা। খুব ক্লান্ত লাগলে খানিকটা আরাম করে নেবেন। সুসজ্জিত সেই রথের সামনের দিকে চালকের পিছনের দিকে আছে চার জনের বসার সিট। সামনের বাঁ দিকের লাল সোফাটাই বরাদ্দ অখিলেশের জন্য। বাকিগুলোর একটিতে বসবেন তাঁর স্ত্রী ডিম্পল এবং বিশেষ সফরসঙ্গীরা। মুখ্যমন্ত্রীর টুইটারে যাতে কোনও বাধা না আসে তার জন্য ভিতরে রয়েছে ফোর-জি ইন্টারনেটের ব্যবস্থা। বিনা বাধায় ভিডিও কলও করতে পারবেন। দুই প্রান্তে দু’টো বড় টিভি স্ক্রিন সব সময় বাইরের জগতের আপডেট দিয়ে যাবে। রয়েছে বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরা। সমাজবাদী পার্টি সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে এই রথ তৈরিতে খরচ হয়েছে মোট পাঁচ কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার সকালে মুলায়ম সিংহ যাদব পতাকা নেড়ে অখিলেশের রথযাত্রার সূচনা করেন। তবে যাত্রা শুরুর এক কিলোমিটারের মধ্যে যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা যায় অখিলেশের রথে। কিছু ক্ষণের জন্য রথ থেকে নামিয়ে তাঁর এসইউভি-তে উঠে পড়তে হয় তাঁকে। মেরামতির পরে পুনরায় রথযাত্রা শুরু করেন স্বস্ত্রীক অখিলেশ।


রান্নাঘর। রাখা রয়েছে ফ্রিজ

প্রচারে স্ত্রীকে সামনে আনার এ দৃশ্য অবশ্য উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের রাজনীতিতে বেশ বিরলই বলা চলে। নেতাদের বউরা সাধারণভাবে অন্তরালেই থাকেন। রাজনীতির ময়দানে সরাসরি অন্তত তাঁদের দেখা যায় না। কিন্তু অখিলেশ পুরোন কালচার ভাঙছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রোমোশনাল ভিডিওতেও নিজের স্ত্রীকে নিয়ে আসেন অখিলেশ। এ দিন রথযাত্রায় স্ত্রী ডিম্পল শুধু তাঁর সঙ্গেই ছিলেন না, উপরন্তু উপস্থিত অতিথিদের জল এবং খাবারও পরিবেশন করেন তিনি। ডিম্পল বলেন, ‘‘আমরা দু’জনে একসঙ্গে এই সফরের পরিকল্পনা করেছি। যখনই প্রয়োজন পড়েছে আমার পরামর্শও নিয়েছেন তিনি।’’ স্ত্রী ছাড়া এ দিন রথে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিল তাঁদের তিন সন্তানও।

আরও পড়ুন: যাদব বংশে সন্ধির ইঙ্গিত, অখিলেশের রথযাত্রার সূচনা করলেন বাবা-কাকা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন