Jhansi Hospital Tragedy

৩ শিশুকে উদ্ধার, নিজের সন্তানকে বাঁচাতে পারলেন না! ঝাঁসির আগুন ‘ঝলসে’ দিল কুলদীপদের জীবন

শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় আগুন লাগে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজে। সেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১০ শিশুর। ১৬ শিশুর অবস্থা সঙ্কটজনক।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০৪
Share:

ঝাঁসির হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে শিশুমৃত্যুতে হাহাকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

১০ দিন আগে জন্ম। শরীর খারাপ থাকায় শুক্রবার ঝাঁসির মহারানি লক্ষ্মীবাঈ মেডিক্যাল কলেজে সদ্যোজাত সন্তানকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন কুলদীপ এবং তাঁর স্ত্রী। তাকে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (এনআইসিইউ)-এ ভর্তি করানো হয়। আগুনের গ্রাস থেকে তিন শিশুকে বাঁচালেন কুলদীপ। তবে চোখের সামনে ঝলসে যেতে দেখলেন নিজের সন্তানকে।

Advertisement

শিশু বিভাগের সামনের বারান্দাতেই বসে অপেক্ষা করছিলেন কুলদীপ ও তাঁর স্ত্রী। রাত তখন সাড়ে ১০টা। হঠাৎই শিশু বিভাগের এনআইসিইউ-তে নার্স এবং হাসপাতাল কর্মীদের ছুটতে দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে শিশু বিভাগের দিকে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন, ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে এনআইসিইউ। ভর্তি থাকা শিশুদের উদ্ধারের মরিয়া চেষ্টা চলেছে।

আর স্থির থাকতে পারেননি। হাসপতালের কর্মীদের সঙ্গে উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েন ওই যুবক। বিভাগের জানলা ভেঙে শিশুদের বাইরে বার করা হয়। চোখের সামনে এতগুলো শিশুকে আগুন গ্রাস করতে চলেছে, এই দৃশ্য দেখে দিশাহারা হয়ে পড়েন। কোনও রকমে হাতের সামনে থাকা তিন শিশুকে উদ্ধার করেন। ধোঁয়ায় চোখ জ্বলছে। দমবন্ধ হয়ে আসছিল তাঁর। কিন্তু হাল ছাড়েননি। ওই তিন শিশুকে নিরাপদে বাইরে বার করেন। কিন্তু নিজের সন্তান কোথায়? সেও তো ওই বিভাগেই ভর্তি ছিল।

Advertisement

আগুন তত ক্ষণে শিশু বিভাগের অর্ধেক গ্রাস করে ফেলেছিল। তোয়াক্কা না করে আবার ঢুকে পড়েন কুলদীপ। না, খুঁজে পাননি তাঁর সন্তানকে। নিজের হাত আগুনে ঝলসে গিয়েছিল। তাতেও দমেননি। কিন্তু যে জায়গায় তাঁর শিশু ছিল, সেই জায়গাটি তত ক্ষণে সম্পূর্ণ আগুনের গ্রাসে। লেলিহান শিখার দিকে তাকিয়ে এক অসহায় পিতার চোখ তখনও খুঁজে চলেছিল তাঁর ১০ দিনের সন্তানকে। ওই ওয়ার্ডে মোট ৫৪ শিশু ভর্তি ছিল। ৪৪ জনকে উদ্ধার করা গেলেও ১০ জনের ‘ঝলসে’ মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে কুলদীপেরও পুত্র রয়েছে। সন্তানকে হারিয়ে এখন দিশাহারা কুলদীপ। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘‘আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না। আগুনে পুড়ে আমার সব স্বপ্ন ছাই হয়ে গেল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement