কামাক্ষী দেবী। চিন্নাস্বামীতে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
অফিসে খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাঁর ল্যাপটপ। বস্কে অনুরোধ করেছিলেন কয়েক ঘণ্টার জন্য ছুটি দিতে। আরসিবির অনুষ্ঠান দেখেই আবার ফিরে আসবেন অফিসে। বস্-এর কাছ থেকে অনুমতি পেয়েই ছুটেছিলেন চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের উদ্দেশে। কিন্তু কে ভেবেছিলেন, হাসিমুখে অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়া সেই মেয়েটিই নিথর হয়ে ফিরবেন! বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী কামাক্ষী দেবীর।
অফিসের সহকর্মীরা এখনও ভাবতে পারছেন না যে, কামাক্ষী আর কোনও দিনই অফিসে ফিরে আসবেন না। আর কারও সঙ্গে হাসিঠাট্টা করবেন না। বাড়ি তামিলনাড়ুতে হলেও পড়াশোনা এবং কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতেই থাকতেন কামাক্ষী। সহকর্মীরা জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরুর প্রতি কামাক্ষীর আলাদা একটা টান ছিল। খেলাপাগল ছিলেন তিনি। তামিলনাড়ুর হলেও আরসিবির প্রতি গভীর ভালবাসা ছিল তাঁর। বিশেষ করে কোহলির ‘ডাই হার্ড ফ্যান’ ছিলেন তিনি।
সদ্য আইপিএল জিতেছে বিরাটের আরসিবি। সেই জয় উদ্যাপন করার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে সেই বিজয়োৎসব পালন করা হবে। কামাক্ষীর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, আরসিবি-র উদ্যাপন দেখবেন বলে বস্-কে আগে থেকেই জানিয়ে রেখেছিলেন কামাক্ষী। সহকর্মীদের কথায়, ‘‘বিষয়টি নিয়ে খুব উচ্ছ্বসিত ছিল কামাক্ষী। বস্ ছুটি মঞ্জুর করতেই হাসিমুখে অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েছিল। বলে গিয়েছিল, এসে আবার কাজ করবে। ল্যাপটপও খুলে রেখে গিয়েছিল।’’
বুধবার কামাক্ষী, তাঁর তুতো ভাই বীরবাহু এবং আরও তিন সহকর্মীকে নিয়ে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দুপুর আড়াইটে নাগাদ পৌঁছোন। বীরবাহু বলেন, ‘‘স্টেডিয়ামের ৭ নম্বর গেট দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছিলাম। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বিশাল ভিড়ের জমায়েত হয় ওই গেটের সামনে। ধাক্কাধাক্কিতে আমরা একে অপরের থেকে ছিটকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলাম। তার পরই শুনলাম কামাক্ষী আর নেই। ভিড়ের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওর।’’ প্রসঙ্গত, বুধবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আরসিবি-র বিজয়োৎসবে পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন তামিলনাড়ুর কামাক্ষীও।