জেএনইউ কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল এসএফআইয়ের। সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
রাষ্ট্রদ্রোহ কাকে বলে সেটা কি আদৌ জানেন আপনারা— দিল্লি পুলিশকে রীতিমতো কটাক্ষ করে প্রশ্ন রাখল দিল্লি হাইকোর্ট। জেএনইউ-এর ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমারের জামিন মামলায় আজ হাইকোর্ট পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলে। মামলাটির রায় আগামী বুধবার পর্যন্ত স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি প্রতিভা রানি।
ঘটনার দিন জেএনইউয়ে উপস্থিত থেকেও পুলিশ কেন দেশবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে কারও বিরুদ্ধে এফআইআর করেনি, জানতে চেয়েছে আদালত। আদালতের প্রশ্ন, ঘটনার দিন (৯ ফেব্রুয়ারি) সাদা পোশাকের পুলিশ ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিল। তা হলে সেই দিনই কারও বিরুদ্ধে এফআইআর হল না কেন? পুলিশ নিজে ভিডিও রেকর্ডিং করল না কেন? টেলিভিশন চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজ দেখে কেন পুলিশকে কানহাইয়ার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের অভিযোগ আনতে হল? উত্তরে পুলিশ স্বীকার করে নেয়, কানহাইয়া দেশবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন, এমন কোনও ভিডিও তাদের হাতে নেই। তবে তাদের দাবি, বেশ কয়েক জন সাক্ষী কানহাইয়াকে স্লোগান দিতে দেখেছেন।
কানহাইয়ার আইনজীবী কপিল সিব্বল অবশ্য আদালতে জানান, কানহাইয়া দেশবিরোধী স্লোগান দেননি। জেএনইউ ক্যাম্পাসের মধ্যে মুখ-ঢাকা কিছু লোক দেশবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল।সিব্বল দাবি করেন, কানহাইয়া ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন না। ফলে তার বিরুদ্ধে মামলা টিকতে পারে না। সহযোগী আইনজীবী রেবেকা জন যুক্তি দেন, কানহাইয়া মুখ-ঢাকা লোকগুলির পরিচয়পত্র দেখতে চাইছেন— ভিডিওতে সেই দৃশ্য দেখতে পাবে আদালত। কিন্তু কানহাইয়া দেশবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন— এমন অভিযোগ প্রমাণ করার মতো কোনও রেকর্ডিংয়ের ফরেন্সিক রিপোর্ট সামনে নেই। দিল্লির আপ সরকারের তরফে আইনজীবী রাহুল মেহরা দাবি করেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারি জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদ সভাপতির বক্তৃতাই বুঝিয়ে দিচ্ছে, তিনি এক জন দেশভক্ত। তাকে মুক্তি দেওয়ার আর্জি জানান তিনি।
দিল্লি পুলিশের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা অবশ্য যুক্তি দেন, সাক্ষীদের বয়ান ও বিলি হওয়া প্রচারপত্রই বুঝিয়ে দিচ্ছে, কানহাইয়া ও অন্য কয়েক জন দেশবিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন। আফজল গুরুর নামে পোস্টারও হাতে নিয়েছিলেন তারা। দেশদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া আরও দুই ছাত্র উমর খালিদ ও অনির্বাণ ভট্টাচার্যের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ আরও এক দিন বাড়িয়েছে দিল্লির আদালত।