শৈলবালার সঙ্গে তর্ক অভিযুক্ত বিজয় সিংহের। এই ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে হিমাচল প্রদেশের কসৌলীতে অবৈধ ভাবে নির্মিত হোটেল ভাঙতে গিয়েছিলেন তিনি। সরকারি কর্মচারী, শৈলবালা শর্মা। হোটেলমালিকের গুলিতে সেখানেই মৃত্যু হল তাঁর। মঙ্গলবারের এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট আজ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা শুরু করেছে। আগামী কাল শুনানি।
বিচারপতি মদন বি লোকুর এবং বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চ আজ হিমাচল সরকারকে ভর্ৎসনা করে বলেছে, ‘‘এ ভাবে চলতে থাকলে আমরা কোনও বিষয়ে নির্দেশ দেওয়াই বন্ধ করে দেব।’’
হিমাচলপ্রদেশের সোলান জেলার কসৌলী আর ধর্মপুরের বেশ কয়েকটি হোটেল অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে বলে রায় দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ওই সব হোটেল আর রিসর্টের মালিকরা। কিন্তু এ বছরের এপ্রিলে সোলান জেলার মোট ১৩টি হোটেল ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য ছিল, এ ভাবে অবৈধ নির্মাণ গড়ে তুলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের অধিকার কারও নেই।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই কাল কসৌলীর হোটেলগুলি ভাঙতে গিয়েছিল পূর্ত দফতর। গোটা বিষয়টি তত্ত্বাবধান করছিলেন শৈলবালা। বিপত্তি ঘটে নারায়ণী গেস্ট হাউসে। ছ’তলা ওই হোটেলটির মাত্র তিন তলা অবধি তোলার অনুমতি ছিল। কিন্তু মালিক বিজয় সিংহ সরকারি নির্দেশের তোয়াক্কা করেননি। হোটেল ভাঙতে এলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকিও দিয়ে রেখেছিলেন। কাল প্রথমে শৈলবালার সঙ্গে তর্ক বাধে তাঁর। সেই ঘটনার ভিডিয়ো ভইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাদানুবাদের সময় আচমকাই শৈলবালার উপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান তিনি। তাঁর গুলিতে আহত হয়েছেন এক শ্রমিকও।
আজ সরকারকে আদালতের প্রশ্ন, ‘‘এক জন গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেল, আর পুলিশ তখন কী করছিল? ওই মহিলাকে মারা যেতে দেখছিল?’’ সরকারের আইনজীবী আদালতকে জানিয়েছেন, পুলিশ তখন পাশের একটি হোটেল ভাঙার কাজ তদারকি করছিল। গুলির আওয়াজ শুনে তারা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়, তত ক্ষণে মৃত্যু হয়েছে শৈলবালার। আর হোটেল মালিক বিজয় পালিয়ে গিয়েছেন। জবাবে অসন্তুষ্ট আদালতের বক্তব্য, ‘‘এর থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট যে পরিবেশ আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে যে সব হোটেল মালিকরা শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিলেন, তাঁরা আইনের তোয়াক্কা করেন না। পলাতকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা উচিত।’’