National News

কাশ্মীরে ধৃত লস্করের ‘হিন্দু’ জঙ্গিকে নিয়ে তোলপাড় উঃপ্রদেশও

সন্দীপের আদত বাড়ি উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে। ২০১২ সালে ওয়েল্ডিং-এর কাজ করতে সন্দীপ উত্তরপ্রদেশ থেকে চলে গিয়েছিল কাশ্মীরে। বেশির ভাগ সময় সন্দীপ তখন কাশ্মীরেই কাটাত। শুধু শীত পড়লেই কাশ্মীর ছেড়ে যেত অন্য কোথাও। কাশ্মীর থেকে বেরিয়ে সন্দীপ বার বার যেত পাটিয়ালায়। সেই সময়েই পাটিয়ালায় গিয়ে সন্দীপের সঙ্গে পরিচয় হয় ভারতে লস্কর-ই-তৈবার ‘মাথা’দের সঙ্গে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ১৮:৪৪
Share:

কাশ্মীরে গ্রেফতার হিন্দু লস্কর জঙ্গি সন্দীপ শর্মা।

সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার হিন্দু জঙ্গি সন্দীপ কুমার শর্মাকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে। গত মাসে কাশ্মীরে একের পর এক ব্যাঙ্ক ডাকাতি ও এটিএমে হামলার ঘটনায় সন্দীপ জড়িত বলে অভিযোগ। ৬ পুলিশকর্মী খুনের ঘটনাতেও সন্দীপ জড়িত বলে পুলিশের সন্দেহ। মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে নিউ অঙ্কিত বিহার কলোনি থেকে জেরার জন্য পুলিশ আটক করেছে সন্দীপের মা ও তাঁর বৌদি রেখাকে। উপত্যকায় জঙ্গি সন্ত্রাস শুরু হওয়ার পর এই প্রথম লস্করের কোনও হিন্দু জঙ্গি গ্রেফতার হল।

Advertisement

পুলিশ জানাচ্ছে, সন্দীপের মা বলেছেন, তাঁর ছেলে যদি কোনও অন্যায় করে থাকে, তা হলে তার শাস্তি পাওয়াই উচিত। আরেকটু এগিয়ে সন্দীপের দাদা বলেছেন, তাঁর ভাইকে গুলি করে মারা উচিত।

কাশ্মীর পুলিশের আইডি মুনির খান বলেছেন, ‘‘সন্দীপের আদত বাড়ি উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে। ২০১২ সালে ওয়েল্ডিং-এর কাজ করতে সন্দীপ উত্তরপ্রদেশ থেকে চলে গিয়েছিল কাশ্মীরে। বেশির ভাগ সময় সন্দীপ তখন কাশ্মীরেই কাটাত। শুধু শীত পড়লেই কাশ্মীর ছেড়ে যেত অন্য কোথাও। পুলিশ খবর নিয়ে জেনেছে, কাশ্মীর থেকে বেরিয়ে সন্দীপ বার বার যেত পাটিয়ালায়। সেই সময়েই পাটিয়ালায় গিয়ে সন্দীপের সঙ্গে পরিচয় হয় ভারতে লস্কর-ই-তৈবার ‘মাথা’দের সঙ্গে। এই ভাবেই কুলগাঁওয়ের বাসিন্দা শাহিদ আহমেদের সঙ্গে সন্দীপের পরিচয় হয় পঞ্জাবে। এ বছর জানুয়ারিতে কাশ্মীরে ফিরে বড় রকমের হামলার ফন্দি আঁটতে শুরু করে সন্দীপ। ছক কষতে থাকে ব্যাঙ্ক ডাকাতি ও এটিএম লুঠের।’’

Advertisement

পুলিশ জানতে পেরেছে, এর পর এ বছরের গোড়ার দিকে কুলগাঁওয়ে শাহিদের সঙ্গে একটি ঘর ভাড়া নেয় সন্দীপ। সেই বাড়িতে থাকতো মুনিব শাহ ও মুজফফর আহমেদের মতো আরও দু’জন। পুলিশ পরে জানতে পারে, ওই দু’জনও ছিল লস্কর-ই-তৈবার সক্রিয় সদস্য। ওই জায়গাতেই সন্দীপ আর তার বন্ধুদের সঙ্গে মোলাকাত হয় লস্করের কট্টর জঙ্গি শাকুরের।

কাশ্মীর পুলিশের আইজি মুনির খানের কথায়, ‘‘তখন থেকেই সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে পারদর্শী হয়ে ওঠে সন্দীপ। দক্ষিণ কাশ্মীরে ব্যাঙ্ক ডাকাতি ও এটিএম লুঠের দায়িত্বটা সন্দীপের কাঁধেই চাপিয়ে দেয় লস্কর জঙ্গিরা।’’

পুলিশ জানাচ্ছে, কাশ্মীরে সেনা কনভয়ের ওপর হামলার ঘটনাতেও সক্রিয় ভূমিকা ছিল সন্দীপের। ব্যাঙ্ক ডাকাতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে এ বছরের মার্চে, মির বাজারে কয়েক জন সঙ্গী সহ গ্রেফতার হয়েছিল সন্দীপ। ছিল বিচারবিভাগীয় হেফাজতে। পরে জামিনে মুক্তি পায়।

আরও পড়ুন- গবাদি পশু কেনাবেচায় কেন্দ্রের নির্দেশে স্থগিত ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টেও

পুলিশ সূত্রের খবর, সন্দীপকে ধরা হয়েছে সেই বাড়িটি থেকে, যেখানে জুলাইয়ে লুকিয়ে থাকা কট্টর লস্কর জঙ্গি বশির লাশকারির মৃত্যু হয় নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে। বশির ৬ পুলিশকর্মী খুনের ঘটনার মূল চক্রী ছিল। কুলগাঁওয়ে সন্দীপের সঙ্গে থাকত যে, সেই মুনিব শাহকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

সন্দীপের দাদা প্রবীণ শর্মা হরিদ্বারে ট্যাক্সি চালান। তিনি পুলিশকে বলেছেন, তাঁর ভাইকে গুলি করে মারা উচিত। গত তিন বছর ধরে ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর বা তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যের কোনও রকম যোগাযোগ ছিল না বলেও সন্দীপের দাদা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন