hindu

Hindu Rashtra: ২০২৩ সালেই হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা! রাজধানী কাশী, সংবিধান লেখা চলছে, অন্ধকারে সঙ্ঘ পরিবার

দাবি, ফিরে আসবে ‘বর্ণাশ্রম’ ব্যবস্থা। বিচার হবে ‘ত্রেতা ও দ্বাপর যুগের নিয়ম’ মেনে। ‘বদলে যাবে’ দেশের রাজধানীও। দিল্লির বদলে কাশী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২২ ২০:১৫
Share:

হিন্দু রাষ্ট্রের সংবিধানও তৈরি হচ্ছে! প্রতীকী চিত্র

প্রকাশ্যেই ভারতীয় সংবিধানকে বদলে ফেলে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বানানোর ঘোষণা। চলছে নতুন ‘সংবিধান’ তৈরির কাজ। খসড়াও তৈরি হয়ে গিয়েছে। উদ্যোক্তা বারাণসীর শঙ্করাচার্য পরিষদ নামে এক সংগঠন। এমনই খবর বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। পরিষদের দাবি, ২০২৩ সালে মাঘ-মেলা উপলক্ষে প্রয়াগরাজের ‘ধর্ম সংসদ’-এ ঘোষণা করা হবে সেই ‘সংবিধান’। যে ‘সংবিধান’ অনুযায়ী, ভারতে ভোটাধিকার থাকবে শুধু হিন্দুদের। বাকি ধর্মের প্রতিনিধিরা দেশে থাকতে পারবেন, অন্যান্য অধিকারও থাকবে, কিন্তু ভোট দিতে পারবেন না। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরে তৃণমূল থেকে সিপিএম সকলেই বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের নিন্দায় সরব। তবে সঙ্ঘ পরিবারের কট্টরপন্থী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি, এমন কর্মসূচির কথা তাঁদের জানাই নেই। যোগাযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপিও।

Advertisement

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এক দল সাধুসন্ত এবং বিশিষ্টজন মিলে ‘হিন্দু রাষ্ট্রের’ রূপরেখা তৈরি করছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে সংগঠনের পক্ষে যে ধর্ম সংসদ হয়েছিল, সেখানে আলাদা ‘সংবিধান’ তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এখন ৩০ জনের একটি দল সেই কাজ করছে। শঙ্করাচার্য পরিষদের সভাপতি স্বামী আনন্দস্বরূপ বলেছেন, ‘‘মোট ৭৫০ পাতার সংবিধান তৈরি হবে যা নিয়ে এখন পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা চলছে। আলোচনায় অংশ নেবেন ধর্মীয় পণ্ডিত এবং বিশেষজ্ঞরা। তার ভিত্তিতে সংবিধানের অর্ধেক (৩০০ পাতার মতো) প্রকাশ্যে আনা হবে ২০২৩ সালের মাঘ-মেলায়।’’ এর মধ্যে শিক্ষা, নিরাপত্তা, আইন ব্যবস্থা, ভোটদান-সহ কিছু বিষয় নিয়ে ৩২ পাতার খসড়া তৈরি হয়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন আনন্দস্বরূপ।

আনন্দস্বরূপ এই বিষয়ে জানাতে গিয়ে এমন আশাও ব্যক্ত করেছেন যে, ‘‘আগামীতে একদিন বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার একসঙ্গে এসে যাবে।’’ পরিকল্পনা অনুযায়ী এখনকার সংসদীয় ব্যবস্থার পরিবর্তে তৈরি হবে ৫৪৩ সাংসদের ‘ধর্ম সংসদ’। দাবি, ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা কোনও নিয়মকানুন কাজ করবে না সেই অখণ্ড ভারতে। সবই চলবে ‘বর্ণাশ্রম’ ব্যবস্থা মেনে। বিচারব্যবস্থা চলবে ‘ত্রেতা ও দ্বাপর যুগের নিয়মে’। শিক্ষায় ফিরবে প্রাচীন গুরুকূল পদ্ধতি। দেশের সব নাগরিকের সামরিক প্রশিক্ষণ হবে বাধ্যতামূলক। আর কৃষিক্ষেত্র থাকবে সম্পূর্ণ ভাবে করমুক্ত। এ ছাড়া, ‘বদলে যাবে’ দেশের রাজধানীও। দিল্লির বদলে কাশী।

Advertisement

এমন সম্ভাব্য ভারতের কথা শুনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘এ সব হচ্ছে আরএসএস-এর মস্তিস্কপ্রসূত ব্যাপার। বহুমতের ভারতে বিচ্ছিন্নতাবাদের ভাবনা। এই সব কথা বলা হলে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কও ধাক্কা খাবে।’’ একই ভাবে নিন্দায় সরব হয়েছেন তৃণমূলের প্রবীন সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় বিষয়। বহুত্বের দেশ ভারতে এমন ভাবনার প্রতিবাদ করা উচিত সকলের।’’ সকলের তোপ যাদের দিকে, সেই সঙ্ঘ পরিবার অবশ্য কিছুই জানে না বলে দাবি করছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সর্বভারতীয় মুখপাত্র বিনোদ বনসল আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এমন কোনও কর্মসূচি বা ভাবনাই নেই পরিষদের। কারা এটা তৈরি করছেন বা কী করছেন সে ব্যাপারে পরিষদের কিছু জানাই নেই।’’ একই সুরে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আরএসএস যে হিন্দু রাষ্ট্রের কথা বলে তা ভৌগলিক সীমারেখায় তৈরি নয়। তা এক সংস্কৃতি। সেই হিন্দু রাষ্ট্র তো রয়েইছে। আর ভারতীয় জনতা পার্টি দেশের যে সংবিধান রয়েছে তার উপরে সম্পূর্ণ আস্থা রেখে তার মধ্যে থেকেই কাজ করায় বিশ্বাসী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন