জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র তল্লাশি অভিযানে উদ্বিগ্ন কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাকামী ও হুরিয়ত নেতারা আজ বৈঠক করে ঠিক করতে চেয়েছিলেন তাঁদের পরবর্তী কৌশল। কিন্তু প্রশাসনের তৎপরতায় সেই বৈঠক তাঁরা করতে পারলেন না।
ভূস্বর্গে সন্ত্রাস, পাথরবাজি, বিক্ষোভ ও অন্য যে কোনও ভাবে অশান্তি পাকানোর জন্য পাকিস্তান কাদের মাধ্যমে টাকা ঢালছে, জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এখন সেই যোগসূত্রগুলি খুঁজে বার করতে ব্যস্ত। উপত্যকা, দিল্লি ও হরিয়ানায় গত দু’দিন ধরে অভিযান চালিয়ে তারা বিপুল অর্থ, স্বর্ণমুদ্রা ও জঙ্গিদের লেটারহেডের মতো নথিপত্র উদ্ধার করেছে। তল্লাশি হয়েছে যাঁদের বাড়ি ও অফিসে, তাঁদের বেশির ভাগই শীর্ষ হুরিয়ত নেতাদের ঘনিষ্ঠ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বলছে, হাওয়ালা ও ভুয়ো ব্যবসার আড়ালে পাকিস্তানের সঙ্গে এ হারে অন্তত ১৫০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে ততীয় কোনও দেশে যোগ করিয়ে দিয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। তদন্তে দেখা যাচ্ছে, নামে-বেনামে হুরিয়ত নেতাদের জমি-জমা-সম্পত্তি বেড়েছে প্রচুর। এই অবস্থায় হুরিয়ত নেতাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজকর্মে কড়া হাতে রাশ টানতে চায় নরেন্দ্র মোদী সরকার। পাল্টা কৌশল ঠিক করতেই হুরিয়ত কনফারেন্স (জি)-র নেতা মহম্মদ শাহ গিলানির বাড়িতে গিয়ে আজ বৈঠক করবেন বলে ঠিক করেছিলেন বাকি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। কৌশল স্থির করার পরে এ দিন সাংবাদিক বৈঠক করারও পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
আরও পড়ুন: এনএসজি, কপ্টার নিয়ে চাপ চিনের
কিন্তু তাঁদের এই উদ্যোগ ঠেকাতে গত কাল রাত থেকেই তৎপর হয় প্রশাসন। মিরওয়াইজ উমর ফারুককে রাতেই তাঁর নাগিন লেক এলাকার বাড়িতে গৃহবন্দি করা হয়। জম্মু-কাশ্মীর লিবারেশন ফ্রন্টের প্রধান ইয়াসিন মালিককে গ্রেফতার করে আজ সকাল থেকে রেখে দেওয়া হয় মইসুমা থানায়। পুলিশ সূত্রের খবর, বৈঠকে আর যাঁদের আসার সম্ভাবনা ছিল, সেই সব বিচ্ছিন্নতাকামী নেতাদেরও জায়গায় জায়গায় আটক বা গৃহবন্দি করা করে রাখা হয় এ দিন।
আর যেখানে ওই বৈঠক হওয়ার কথা, গিলানির সেই হায়দারপোরার বাড়িটি এ দিন ছিল পুরোপুরি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে। ওই বাড়িতে গিলানি গৃহবন্দি রয়েছেন গত কিছু দিন ধরে। আজ সকাল থেকে কাউকেই সেই বাড়ির ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। ফলে ভূস্বর্গের বিচ্ছিন্নতাকামী নেতারা আজ অন্তত নিজেরাই বিচ্ছিন্ন হয়ে রইলেন পরস্পরের থেকে।