এত খেটেও কথা শুনছি, কটাক্ষ প্রধানমন্ত্রীর

কাজ না করলে মানুষের সমালোচনা হয়, কিন্তু অনেক খেটেও তাঁকে সমালোচনা শুনতে হচ্ছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারের বর্ষপূর্তির দিনে সাংহাইয়ে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সামনে মোদীর দাবি, তাঁর প্রতিটি মুহূর্তই ভারতবাসীর। তাতে অবশ্য থামছে না বিরোধীদের তোপ। আজ চিন সফরের শেষ পর্বে সাংহাই ঘুরে মঙ্গোলিয়া গিয়েছেন মোদী। বর্ষপূর্তির দিনে ২,২০০ কোটি ডলারের চুক্তিও হয়েছে ভারতীয় ও চিনা সংস্থার। অনেকের মতে, আজ সাংহাইতে দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে দেশের মানুষ, প্রবাসী ভারতীয় ও চিনা সমাজকে বার্তা দিয়েছেন মোদী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

সাংহাই শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৫ ০৩:০৮
Share:

আশীর্বাদ। ভারত-চিন বাণিজ্য বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক ব্যবসায়ী। ছবি: পিটিআই।

কাজ না করলে মানুষের সমালোচনা হয়, কিন্তু অনেক খেটেও তাঁকে সমালোচনা শুনতে হচ্ছে বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারের বর্ষপূর্তির দিনে সাংহাইয়ে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সামনে মোদীর দাবি, তাঁর প্রতিটি মুহূর্তই ভারতবাসীর। তাতে অবশ্য থামছে না বিরোধীদের তোপ।

Advertisement

আজ চিন সফরের শেষ পর্বে সাংহাই ঘুরে মঙ্গোলিয়া গিয়েছেন মোদী। বর্ষপূর্তির দিনে ২,২০০ কোটি ডলারের চুক্তিও হয়েছে ভারতীয় ও চিনা সংস্থার। অনেকের মতে, আজ সাংহাইতে দাঁড়িয়ে একই সঙ্গে দেশের মানুষ, প্রবাসী ভারতীয় ও চিনা সমাজকে বার্তা দিয়েছেন মোদী।

বার বার বিদেশ সফরের ঘটা নিয়ে সম্প্রতি তাঁর সমালোচনা করেছিলেন বিরোধীরা। আজ মোদী বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পরে তিনি কাজ ফেলে রাখেননি। তাই প্রথম বছরে বিদেশের চোখে ভারতের ছবি বদলাতেই তাঁকে সফর করতে হচ্ছে। এখন যে সম্পর্কের বীজ বপন করবেন ক্ষমতায় থাকার বাকি সময় ধরে সেই বীজকেই যত্ন করে মহীরুহ করার চেষ্টা করবেন। ৩০ বছরের ভুল শোধরানোর চেষ্টা করছেন বলেও দাবি মোদীর। আর প্রবাসী সম্প্রদায় ও চিনকে বোঝাতে চেয়েছেন, ভারত ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য তৈরি। এই কাজের জন্য সাংহাই এক্সপো সেন্টারে প্রবাসী ভারতীয়দের অনুষ্ঠান ও দু’দেশের শিল্পমহলের যৌথ মঞ্চকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

বিদেশে গিয়ে বিরোধীদের সমালোচনা করা নিয়ে আগেও মোদীর সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। আজ দলীয় মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন, মোদী চিনে গিয়েও বিরোধীদের আক্রমণ করছেন। জঘন্য রাজনীতির এ এক নতুন স্তর। ৬৭ বছরে হওয়া সব কাজ উড়িয়ে দিয়ে শুধু নিজের ঢাক পেটাতে চাইছেন তিনি। সুরজেওয়ালার কথায়, ‘‘আরএসএস প্রচারকের বেশ ছেড়ে প্রধানমন্ত্রীর বেশ পরার সময় এসেছে মোদীর।’’ তবে বিরোধীরা যা-ই বলুন, মোদী ভারতীয় কূটনীতিতে নতুন আঙ্গিক এনেছেন বলে ধারণা অনেকেরই। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে মোদী ব্যক্তিগত কূটনীতিকেও বড় হাতিয়ার করছেন বলে মনে করছেন অনেকে। কাল চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াংয়ের সঙ্গে তোলা নিজস্বী তারই অন্যতম অঙ্গ।

কূটনীতিকদের মতে, রাষ্ট্রনেতার ব্যক্তিগত ক্যারিশমা এ ক্ষেত্রে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এক সময়ে কূটনীতিতে ব্যক্তিগত রং এনেছিলেন অটলবিহারী বাজপেয়ী। মনমোহন সিংহের জমানায় সেই ব্যক্তিগত ক্যারিশমা দেখা যায়নি। কিন্তু কূটনীতিকদের মতে, বিষয়টিকে অন্য স্তরে নিয়ে গিয়েছেন মোদী। প্রযুক্তির অগ্রগতি তাঁকে সাহায্য করেছে।

বিদেশ সফরে সে দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে নিজস্বী থেকে বৈঠকের বিষয় —টুইটারে সবই জানান মোদী। তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবিরের মতে, ‘‘গ্লোবাল ভিলেজ’’-এ রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে এখন ব্যক্তিগত সখ্য আছে। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে মোদী ‘বারাক’ বলে ডাকলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে কূটনৈতিক সৌজন্য ছাড়া এখন ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতার অনেক চিত্রই দেখা যায় বলে জানাচ্ছেন মোদী-ঘনিষ্ঠেরা। কূটনীতিকদের মতে, মোদী, ওবামা, খ্যছিয়াং, পুতিনেরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী প্রজন্মের রাষ্ট্রপ্রধান। তাঁদের কূটনীতির ভাষা আলাদা হওয়াই স্বাভাবিক। এই ছন্দে মিলতে না পারলে পিছিয়ে পড়বে ভারত। তাই নিজস্বী তুলে তাক লাগানোর দরকার আছে মোদীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন