Nattional News

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে মুক্তমনাদের গুলির নির্দেশ দিতাম, মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ১০:৫৯
Share:

বসনগৌড়া পাটিল ইয়াৎনাল। ছবি সৌজন্যে ফেসবুক

বাড়িতে ঢুকে নির্মম ভাবে খুন করা হয়েছিল বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক এম এম কালবুর্গিকে। সাংবাদিক গৌরি লঙ্কেশকেও গুলি করে খুন করেছে দুষ্কৃতীরা। এ বার সেই কর্নাটকেই মুক্তমনাদের বিরুদ্ধে তীব্র উস্কানিমূলক মন্তব্য করলেন এক বিজেপি বিধায়ক। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে বিদ্বজ্জনদের গুলি করে মারার নির্দেশ দিতেন বলে মন্তব্য করলেন বিজয়পুরার বিজেপি বিধায়ক বসনগৌড়া পাটিল ইয়াৎনাল। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ইয়াৎনালের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস এবং জেডিএস উভয় দলই।

Advertisement

বৃহ্স্পতিবার ছিল কার্গিল বিজয় দিবস। নিজের বিধানসভা এলাকার মধ্যেই এই উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ইয়াৎনাল। সেখানে জনতার উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘এই সব লোকেরা (যুক্তিবাদী ও মুক্তমনা) আমাদের দেশে থেকে আমাদের দেওয়া করের টাকায় সমস্ত সুযোগ সুবিধা নেয়। তারপর ভারতীয় সেনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। দেশের জন্য এই সুশীল সমাজ ও ধর্মনিরপেক্ষতার চেয়ে বিপজ্জনক আর কিছু নেই। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হলে এই সব বুদ্ধিজীবীদের গুলি করার নির্দেশ দিতাম।’’ যুক্তিবাদী ও মুক্তমনাদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিতেও ছাড়েননি ইয়াৎনাল। মঞ্চের নীচে বসা জনতাও নেতার ভাষণে ফেটে পড়েন করতালিতে।

একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বরাবরই বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে ইয়াৎনালকে। কিন্তু আচমকা যুক্তিবাদীদের এমন কদর্য আক্রমণ কেন? কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার মিডিয়া উপদেষ্টা আমিন মাট্টু সম্প্রতি বলেন, পরিবারের আর্থিক সমস্যা দূর করতে যুব সম্প্রদায় সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। এঁদের অনেকে দেশের জন্য প্রাণ দেন। সেই প্রসঙ্গেই এ দিন মুক্তমনাদের বিরুদ্ধে বিজেপি বিধায়কের এই মন্তব্য।

Advertisement

আরও পড়ুন: হেমা মালিনী নাকি চাইলে এক মিনিটেই মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন!

ইয়াৎনালের শাস্তির দাবিতে সরব কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাও বলেন, “দেশে অস্থিরতা ও বিভেদ তৈরি করতে গোটা দেশেই এই ধরনের মন্তব্য করছেন বিজেপি নেতারা। বিধায়কের মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার, নিজেদের গোঁড়া মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে খুন করতেও তাঁরা দ্বিধা করেন না।” কর্নাটকে ক্ষমতাসীন জোটের আরেক শরিক জেডিএস-ও বিধায়কের শাস্তির দাবি করেছে।

আরও পড়ুন: হুমায়ুনের মৃ্ত্যুশয্যায় বাবর! গরু বাঁচাতে ইতিহাস পাল্টে দিলেন বিজেপি নেতা

বিজেপির প্রবীণ এই নেতা লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের নেতা। কর্নাটকের বিজেপি সভাপতি তথা সে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়াদুরাপ্পার ঘনিষ্ঠ তিনি। বাজপেয়ী সরকারে আমলে বস্ত্র ও রেল প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। তবে বিতর্কিত ও উস্কানিমূলক মন্তব্যে বরাবরই বিতর্ক বাধিয়েছেন তিনি। মাস খানেক আগেও স্থানীয় পুর আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “মুসলিমদের কোনও সাহায্য করবেন না।” তা নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। মাস খানেকের মধ্যে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করে শিরোনামে বিজয়পুরার বিধায়ক।

বি এস ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে ইয়াৎনাল। ছবি ফেসবুকের সৌজন্যে

এত বিতর্কের পরও কিন্তু ইয়াৎনাল নিয়ে বরাবরই মৌনব্রত অবলম্বন করেছে তাঁর দল। মাস খানেক আগের ওই মন্তব্য প্রসঙ্গেও ইয়েদুরাপ্পা বা অন্য কেউ মুখ খোলেননি। এ বারও বিজেপির পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া বা ব্যবস্থা নেওয়ার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। কংগ্রেস-জেডিএস জোটের বক্তব্য, মৌন থেকে আসলে এই ধরনের উস্কানিমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্যকে সমর্থনই করছে বিজেপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement