—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
সরকারি হাসপাতাল থেকে রক্ত নেওয়ার পর চার শিশু এইচআইভি আক্রান্ত হয়েছে। এমনই অভিযোগে শোরগোল মধ্যপ্রদেশে। দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সে রাজ্যের প্রশাসন।
জানা যাচ্ছে, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ওই চার শিশুর বাড়ি সাতনা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাদের সকলের চিকিৎসা চলছিল সাতনা জেলা হাসপাতালে। রক্তের প্রয়োজন হলে ওই হাসপাতাল থেকে রক্ত নিত তারা। মাস চারেক আগে শেষ বার রক্ত নিয়েছিল ওই চার রোগী। সম্প্রতি রুটিন শারীরিক পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায়, তারা সকলেই এইচআইভি পজ়িটিভ!
শিশুদের পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের গাফিলতিতেই এই বিপদ তৈরি হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত দেওয়ার সময় পুরনো সুচ ব্যবহার করা হয়েছে। সেখান থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে তাঁদের বাচ্চাদের শরীরে।
জাতীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী রক্তদানের আগে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি, হেপাটাইটিস সি এবং অন্যান্য সংক্রমণ যাতে না হয় সে জন্য রক্ত পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। সন্দেহ করা হচ্ছে, মধ্যপ্রদেশের ওই সরকারি হাসপাতাল নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করেনি। নয়তো রক্তপরীক্ষা বা রক্তদানের সময়ে ব্যবহৃত সুচ ব্যবহারে সাবধানী ছিল না। ঠিক কী হয়েছিল, তা জানার জন্য তদন্ত শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ইনচার্জ দেবেন্দ্র পটেল বলেন, ‘‘থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ঘন ঘন রক্তদান করা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন সংক্রমণের ঝুঁকি স্বাভাবিক ভাবেই বেশি থাকে। তবে ওই শিশুরা প্রথমে এইচআইভি নেগেটিভ ছিল। পরে পজ়িটিভ হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন যে, ‘‘আগে রক্ত পরীক্ষার জন্য দ্রুত পরীক্ষার কিট ব্যবহার করা হত। এখন এলিসা-ভিত্তিক পরীক্ষা করা হচ্ছে, যার ঝুঁকি বেশি। তবে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ পাশাপাশি ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, চার শিশুর বাবা-মায়ের রক্তপরীক্ষা হয়েছিল। তাঁরা কেউ-ই এইচআইভি আক্রান্ত নন।
সম্প্রতি জাতীয় এইডস নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (ন্যাকো) রাজ্য এইডস নিয়ন্ত্রণ সমিতিগুলিকে চিঠি লিখে সতর্ক করেছিল, দ্রুত এবং মনোযোগী পদক্ষেপ না করলে, ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস নির্মূলের যে জাতীয় লক্ষ্য রয়েছে, তা নিশ্চিত হবে না। ন্যাকোর মতে, মধ্যপ্রদেশে প্রায় ৭০,০০০ এইচআইভি পজ়িটিভ রোগী রয়েছেন, যার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এইডসের প্রাদুর্ভাবের হার ০.১০ শতাংশ। ইনজ়েকশনের মাধ্যমে মাদক ব্যবহারকারীদের মধ্যে সংক্রমণের হার ৪.২ শতাংশে পৌঁছেছে।