বাড়ির বাইরের দেওয়ালে হিন্দিতে বড় বড় করে লেখা ‘আমি গরিব’। হলুদের উপর দগদগ করছে লাল কালির দাগ। অপমানে মুখ চুন বাড়ির বাসিন্দাদের। কিন্তু তার পরোয়া না করেই রাজস্থানের দৌসা জেলার প্রায় দেড় লাখ বাড়ির দেওয়ালে এই স্লোগান লিখে দিয়ে গিয়েছে জেলা পরিষদের কর্মীরা। কম দামে চাল-ডাল পেতে দরিদ্র পরিবারগুলি এই অপমান মেনে নিতে বাধ্য হলেও ক্ষোভে ফুটছে তারা। এই ঘটনা নজরে আসতে সমালোচনার মুখে পড়েছেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে ও তাঁর সরকার।
দৌসা জেলার ৭০ শতাংশ পরিবার এই সামাজিক প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত। যেখানে ভর্তুকিতে অনেক কম দামে খাদ্যশস্য পেতে পারেন দরিদ্র পরিবারগুলি। জেলা পরিষদের দাবি, ধনী বা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি যাতে বেআইনি ভাবে ভর্তুকির সুযোগ ভোগ করতে না পারে তাই এই ভাবে দরিদ্র পরিবারগুলকি ‘চিহ্নিত’ করার পরিকল্পনা। এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘আগে আমরা গম পাচ্ছিলাম না। দেওয়ালে লেখার পরে রেশন পাচ্ছি। কিন্তু খাবার মিললেও গ্রামের মানুষ এখন ঠাট্টা করছেন আমাদের নিয়ে।’’
ইউপিএ সরকারের আমলে চালু হয় এই জাতীয় খাদ্যসুরক্ষা প্রকল্প। যার অধীনে দরিদ্র পরিবারগুলি ভর্তুকি মূল্যে ৫ কেজি খাদ্যশস্য পায়। রাজ্যের পঞ্চায়েতী রাজ মন্ত্রী রাজেন্দ্র রাঠোর বলেছেন, ‘‘এটা অন্যায়। আমরা দেখছি এরকম কেন হচ্ছে। আমাদের দফতর এরকম কোনও নির্দেশ দেয়নি। ২০০৯ সালে কংগ্রেস বলেছিল, কোনও পরিবার দারিদ্র সীমার নীচে থাকলে বাড়ির বাইরে ‘বিপিএল’ লেখা থাকতে হবে। কিন্তু এ ভাবে ‘আমি গরিব’ লেখানো অন্যায়। আমরা তদন্ত করছি।’’ বিতর্কের মধ্যে বসুন্ধরা রাজ্যে সরকারের দাবি, রাজ্যের কয়েকটি জেলার প্রশাসন নিজেরাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে এই ভাবে গরিব মানুষের মুখে খাবার দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেছেন, ‘‘সরকার খাদ্য সুরক্ষা আইনে খাদ্যশস্যে ভর্তুকি দিচ্ছে। যাঁরা এই সুবিধা পাচ্ছেন, সেটা তাঁদের আইনি অধিকার।’’