Bihar Assembly Election 2025

‘তেজস্বী জননায়ক, বিহারবাসীর আশার আলো’, রাহুলের সামনেই বললেন নির্দল সাংসদ পাপ্পু যাদব

২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে রাহুলের আবেদন সত্ত্বেও পূর্ণিয়া আসনটি কংগ্রেসকে ছাড়েননি তেজস্বী। নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে জিতেছিলেন পাপ্পু। অন্য দিকে, আরজেডির জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৫ ১৬:৩১
Share:

(বাঁদিক থেকে) তেজস্বী যাদব, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, রাহুল গান্ধী এবং পাপ্পু যাদব। ছবি: সংগৃহীত।

বিহারের বিধানসভা ভোটে আরও জোরালো হল বিরোধী ঐক্য। সৌজন্যে, পূর্ণিয়ার নির্দল সাংসদ পাপ্পু যাদব। সোমবার বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ কর্মসূচিতে লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর সামনের আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদের পুত্র তথা বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তেজস্বীকে ‘জননায়ক’ বলে সম্বোধন করলেন পাপ্পু। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন নিয়ে বিজেপিকে নিশানা করে বললেন, ‘‘বিহারবাসীর সামনে তেজস্বীই এখন আশার আলো।’’

Advertisement

চলতি বছরের নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে বিরোধী জোটের মঞ্চে পাপ্পুর উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছে। তাৎপর্য রয়েছে পাপ্পুর মন্তব্যেও। কারণ, কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা ‘জননায়ক’ বলে সম্বোধন করেন রাহুলকে। পাপ্পুর স্ত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ রঞ্জিতা রঞ্জনও বিহারের গুরুত্বপূর্ণ কংগ্রেস নেত্রী। রাহুল, তেজস্বী, পাপ্পুর পাশাপাশি ওই কর্মসূচিতে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এবং ভিআইপি (বিকাশশীল ইনসান পার্টি) নেতা মুকেশ সহানী হাজির ছিলেন।

পূর্ব-মধ্য বিহারের পূর্ণিয়া এবং আশপাশের অঞ্চলের (‘সীমাঞ্চল’ যা নামে পরিচিত) ‘বাহুবলী’ নেতা হিসাবে পরিচিত পাপ্পু একদা লালুর আস্থাভাজন ছিলেন। সিপিএম নেতা অজিত সরকারের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি, পরে লালুর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন পাপ্পু। পরে আবার আরজেডিতে ফিরে যান। ২০১৪-এর লোকসভা ভোটে মধেপুরা আসনে আরজেডি প্রার্থী হিসাবে জেডি(ইউ)-এর শরদ যাদবকে হারিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৫-য় লালুর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে আরজেডি থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন।

Advertisement

এর পরে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসে ফিরে এলেও বিহারের পূর্ণিয়া আসনটি পাপ্পুকে ছাড়েননি তেজস্বী। বরং সেখানে আরজেডি প্রার্থীর প্রচারে গিয়ে পাপ্পুর নাম না করে তেজস্বী বলেছিলেন, ‘‘হয় আমাদের ভোট দিন, নয়তো এনডিএ প্রার্থী। নির্দলকে কখনও ভোট দেবেন না।’’ যদিও শেষ পর্যন্ত জিতেছিলেন নির্দল পাপ্পুই। অন্য দিকে, আরজেডির জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। বিহারের আসন্ন বিধানসভা ভোটে আসন বন্টন নিয়ে ইতিমধ্যেই কংগ্রেস-আরজেডির টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এই আবহে পাপ্পুর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরজেডির একটি সূত্রের দাবি, এ বার কংগ্রেসকে ৫০টির বেশি আসন ছাড়তে রাজি নন তেজস্বী। আরজেডির যুক্তি, ২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে বিহারের ২৪৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭০টিতে লড়ে মাত্র ১৯টি জিতেছিল মহাগঠবন্ধনের ‘মেজো শরিক’ কংগ্রেস। কংগ্রেসের এই খারাপ ‘স্ট্রাইক রেটে’র কারণেই এনডিএ-র জয় সহজ হয়েছিল বলে বিরোধী শিবিরের একাংশের অভিযোগ। যদিও গত বছরের লোকসভা ভোটে বিহারে ২৩টি আসনে লড়ে মাত্র চারটিতে জিতেছিল আরজেডি। ন’টিতে লড়ে তিনটি জেতে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা পাপ্পু যাদবকে পূর্ণিয়া আসনটি ছাড়েননি তেজস্বী। তিনি নির্দল হিসেবে লড়ে জিতেছিলেন। ওই কেন্দ্রে আরজেডি প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছিল।

২০২০ সালের বিধানসভা ভোটে খারাপ ‘স্ট্রাইক রেটে’র জন্য কংগ্রেসের তরফে পাল্টা যুক্তি, তিন দশকের বেশি সময় ধরে বিজেপির দখলে রয়েছে, এমন ৩০টির বেশি শহরাঞ্চলীয় আসন তাদের হাতছাড়া হয়েছিল। ওই বিধানসভা ভোটে আরজেডি ১৪৪টিতে লড়ে ৭৫টি এবং তিন বাম দল ২৯টিতে লড়ে ১৬টি জিতেছিল। তার মধ্যে ১৯টি আসনে লড়ে ১২টিতে জয় পায় সিপিআইএমএল (লিবারেশন)। এ বার ইতিমধ্যেই ৩০টি আসনের দাবি তুলেছে তারা। সিপিআই ছ’টি আসনে লড়ে দু’টিতে এবং সিপিএম চারটি আসনে লড়ে দু’টিতে জিতেছিল। গত বারের ভোটে এনডিএর সহযোগী হিসাবে ভিআইপি ১১টি আসনে লড়ে চারটিতে জয়ী হয়েছিল। এ বার তারা লালু-তেজস্বীর সঙ্গী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement