কয়েক দশক পেরিয়েও বিতর্কের ঘেরাটোপ থেকে বেরোতে পারল না ‘বফর্স’!
আগামী রবিবার সুইডেন সফরে যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। তার আগে গত কাল একটি সুইডিশ সংবাদপত্রে তাঁর সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, বফর্স কাণ্ডে আদৌ দুর্নীতি হয়েছিল কিনা, তা দেশের কোনও আদালতে প্রমাণিত হয়নি। তথাকথিত যে কেলেঙ্কারির কথা বলা হয়, তা কেবল সংবাদমাধ্যমই প্রচার করেছে। বিচারকের ভূমিকা পালন করেছিল সংবাদমাধ্যম।
কিন্তু আজ ওই সংবাদপত্রকে চিঠি লিখে তীব্র আপত্তি জানাল নয়াদিল্লি। সুইডেনের সংবাদপত্রটির দাবি, সে দেশে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বনশ্রী বসু হ্যারিসন বফর্স প্রসঙ্গটি প্রকাশ করা নিয়েই আপত্তি করেছেন। বনশ্রী এও বলেছেন, বফর্স প্রসঙ্গটি প্রকাশ করলে তার প্রভাব রাষ্ট্রপতির সফরের উপরেও পড়তে পারে!
যদিও বনশ্রীদেবী যে চিঠি সংবাদপত্রটির সম্পাদকের কাছে পাঠিয়েছেন, তাতে এমন কথা সরাসরি বলা নেই। চিঠিতে তিনি বলেছেন, সাক্ষাৎকারটি দেওয়ার পর রাষ্ট্রপতি ‘অফ দ্য রেকর্ড’ কিছু সংশোধন করেছিলেন। সেই অংশটিও প্রতিবেদনে লিখে দেওয়া পেশাদারি লক্ষণ নয়। সাক্ষাৎকারটি দেওয়ার সময় মুখ ফস্কে রাষ্ট্রপতি কিছু কথা বলেছিলেন। সেই অংশটি প্রতিবেদনে না রাখার কথাই স্থির হয়েছিল। কিন্তু সে কথার খেলাপ করা হয়েছে। তবে ‘অফ দ্য রেকর্ড’ বলতে কোন অংশটি বনশ্রীদেবী বোঝাতে চেয়েছেন তা তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেননি।
এই বির্তকে রাজনীতি দেখছেন অনেকেই। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বফর্স কাণ্ড নিয়ে রাষ্ট্রপতি যে ভাবে রাজীব গাঁধীকে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছেন, তাতে অখুশি বিজেপি তথা শাসক দল। এ ব্যাপারে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মনোহর পর্রীকর কোনও মন্তব্য করতে চাননি ঠিকই, কিন্তু ঘরোয়া স্তরে বিজেপির অনেক নেতাই ভ্রুকুটি করেছেন। তাঁদের মতে, প্রণববাবুর এই মন্তব্যের পর বফর্স নিয়ে তাঁদের কংগ্রেস-বিরোধী রাজনৈতিক অস্ত্র লঘু হ তে পারে। এই প্রেক্ষাপটে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত যে ভাবে সংবাদপত্রকে চিঠি দিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন তা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে রাষ্ট্রপতির সচিবালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, সংবাদপত্র কী লিখেছে, সেটা বড় কথা নয়। সুইডেনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত চিঠিতে কী লিখেছেন সেটাই প্রাসঙ্গিক।