নোটবন্দির ধাক্কা কত, হিসেবই রাখেনি কেন্দ্র! 

কোনও হিসেব নেই। কোনও হিসেব কষার চেষ্টাও হয়নি। নোট বাতিল এবং তার পরে জিএসটি-র ধাক্কায় রুজি-রোজগারে কতখানি ধাক্কা লেগেছে, তার কোনও সমীক্ষা করা হয়নি বলে জানিয়ে দিল মোদী সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৪
Share:

কোনও হিসেব নেই। কোনও হিসেব কষার চেষ্টাও হয়নি। নোট বাতিল এবং তার পরে জিএসটি-র ধাক্কায় রুজি-রোজগারে কতখানি ধাক্কা লেগেছে, তার কোনও সমীক্ষা করা হয়নি বলে জানিয়ে দিল মোদী সরকার।

Advertisement

লোকসভায় প্রশ্ন উঠেছিল— সংগঠিত, অসংগঠিত ক্ষেত্র, কৃষি ও ঠিকা শ্রমিকদের উপরে নোট বন্দি ও জিএসটি-র কতখানি ধাক্কা লেগেছে, সরকার কি তার কোনও হিসেব কষেছে? মোদী সরকারের শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ারের সটান উত্তর, না। এমন কোনও সমীক্ষা করা হয়নি।

শ্রম মন্ত্রকের শ্রমিক ব্যুরোর রিপোর্টেই কিন্তু আগে বলা হয়েছিল, ২০১৬-র ৮ নভেম্বরের নোট বাতিলের পরে, ২০১৭-র জানুয়ারিতে ১.৫২ লক্ষ অস্থায়ী কর্মী কাজ হারিয়েছিলেন। ৪৬ হাজার আংশিক সময়ের শ্রমিকের কাজ গিয়েছিল। অথচ শ্রমমন্ত্রীর জবাব, নোট বাতিলের ধাক্কার কোনও হিসেব কষা হয়নি।

Advertisement

সপ্তাহ দেড়েক আগে কৃষক আত্মহত্যা নিয়েও মোদী সরকার জানিয়েছিল, দেশে কত চাষি আত্মহত্যা করছেন, গত তিন বছর ধরে তার কোনও হিসেব রাখা হচ্ছে না। শেষ বার ২০১৫-তে তথ্য সংগ্রহ হয়েছিল। ওই বছর ৮ হাজার চাষি আত্মহত্যা করেছিলেন। তার পরে গত তিন বছরে কত জন চাষি আত্মহত্যা করছেন, তার কোনও তথ্যই সংগ্রহ করেনি মোদী সরকার। অথচ চাকরির অভাব আর কৃষক আত্মহত্যা— দু’টিই এখন দেশের জ্বলন্ত সমস্যা। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর মতে, এগুলো লোকসভা ভোটের প্রধান ইস্যুও হতে চলেছে।

নোট বাতিলের ধাক্কায় অসংগঠিত ক্ষেত্রের বহু শ্রমিক রোজগার হারিয়েছিলেন। সিএমআইই-এর (সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি) হিসেবে নোট বাতিলের পরে ৩৫ লক্ষ মানুষের কাজ গিয়েছে। চলতি মাসে অল ইন্ডিয়া ম্যানুফ্যাকচারার্স অর্গানাইজেশনও বলেছে, গত সাড়ে চার বছরে ছোট ও মাঝারি শিল্পে ৩৫ লক্ষ মানুষ চাকরি খুইয়েছেন। নোট বাতিল, জিএসটি তার প্রধান কারণ।

কৃষক সংগঠনগুলির অভিযোগ, নোট বাতিলের পরে বাজারে নগদের অভাবে চাষিরা ফসল বেচতে গিয়ে, সার-বীজ কিনতে গিয়ে মুশকিলে পড়েছিলেন। ফসলের দাম না পাওয়ায় পরের বছরে বহু চাষিই ঋণ শোধ করতে পারেননি।

কিন্তু মোদী সরকারের জবাব, তাদের এ সব কিছুই জানা নেই। কারণ সরকার এ সবের কোনও হিসেবই রাখেনি। শ্রমমন্ত্রী শ্রমিক ব্যুরোর হিসেব দিয়ে দেখিয়েছেন, নোট বাতিলের পরেও ২০১৬-র অক্টোবরের তুলনায় ২০১৭-র জানুয়ারিতে নতুন ১.২২ লক্ষ চাকরি হয়েছিল। কিন্তু ওই রিপোর্টেই যে ওই একই সময়ে অস্থায়ী ও আংশিক সময়ের প্রায় ২ লক্ষ মানুষের কাজ হারানোর কথা ছিল, তা এড়িয়ে গিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন