পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে ভারত বরাবরই সংযত, বলল বিদেশ মন্ত্রক

পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারত বরাবরই সংযত। প্রতিক্রিয়া বিদেশ মন্ত্রকের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৬ ২০:১৮
Share:

হোয়াইট হাউসে নরেন্দ্র মোদীর পাশে বসে নৈশভোজের একদিন পরেই পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারতকেও বিঁধলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

Advertisement

ওয়াশিংটনে পরমাণু নিরাপত্তা সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে ওবামা বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশে যে পারমাণবিক হামলার আশঙ্কা দেখা গিয়েছে, তা কমাতে ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই যৌথভাবে উদ্যোগী হতে হবে। দুটি দেশ যে ভাবে সামরিক শক্তি বাড়িয়ে চলেছে, তাতে এখন তাদের প্রমাণ করতে তারা কিছু ভুল করছে না। কোনও ভুল পথে হাঁটছে না।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অবশ্য আমেরিকা ছেড়ে রিয়াধে পৌঁছে গিয়েছেন। বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তারাও সেখানে। কিন্তু দিল্লিতে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিক্রিয়া পরে দেওয়া হবে। তবে ওবামা জমানায় এটিই ছিল শেষ শীর্ষ সম্মেলন। ফলে তিনি একটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছেন। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারত বরাবরই সংযত। সেই শর্তেই সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পরমাণু সমঝোতা হয়েছে ভারতের। ‘কোল্ড স্টার্ট ডকট্রিন’ মেনেই ভারত চলে সব সময়। আপাতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে উষ্মার কারণ থাকতে পারে নয়াদিল্লির। কিন্তু তাঁর বক্তব্যের মূল নিশানা আসলে পাকিস্তানই।

Advertisement

আরও পড়ুন- পরমাণু অস্ত্র নিয়ে ভারতকেও বিঁধলেন ওবামা

বিদেশ মন্ত্রকের কর্তার ব্যাখ্যা, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ওবামার আলোচনার আগেই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট জন কেরির বৈঠকে পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে ভারত তার উদ্বেগের কথা তুলে ধরে। আমেরিকাও বহুদিন ধরে বলে আসছে গত কয়েক বছর ধরে পাকিস্তানই ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে। যার মূল লক্ষ্যই হল, সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করা। আর যেহেতু সেগুলি সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে, তার একটি অংশ চলে যাচ্ছে আইএস বা আল-কায়দার মত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির হাতে।

ওবামা নিজেও সেই আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ‘‘কোনও কোনও দেশ যে ভাবে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র সম্ভার বাড়িয়ে চলেছে, তাতে উদ্বেগের কারণ রয়েছে। ওই দেশগুলি ছোট ছোট ট্যাকটিকাল পারমাণবিক অস্ত্র বানিয়ে চলেছে। কিন্তু তার বেশ কিছুটা চুরি হয়ে যাচ্ছে বা হাত বদলে অন্য কারও হাতে যাচ্ছে।’’ পাকিস্তানে সম্প্রতি আত্মঘাতী সন্ত্রাস হামলার কারণে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ওয়াশিংটনের এই সম্মেলনে যোগ দেননি। পাকিস্তানের বিদেশ সচিব আইজাজ চৌধুরী অবশ্য জবাব দিয়ে বলেছেন, গত ৪০ বছর ধরে পাকিস্তান ভেবেচিন্তেই অস্ত্র বানাচ্ছে। ছোট ছোট অস্ত্র নিজেদের বাঁচার তাগিদেই করা হচ্ছে। এবং তা মূলত ভারতের আক্রমণের মোকাবিলা করতেই। পাকিস্তান এর উপরে কড়া নজরদারিও রেখে আসছে।

তবে ওবামার মন্তব্যে ঘরোয়া ঝঞ্ঝাও সামলাতে হবে মোদীকে। কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি ইতিমধ্যেই বলে রেখেছেন, ভারত ও পাকিস্তানকে এক পংক্তিতে দেখা মোটেও ঠিক নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন