পাক সরকারের চরিত্র বুঝতে চাইছে দিল্লি

পাকিস্তানের ইমরান খান সরকারের মতিগতির ওপর আপাতত নজর রাখছে ভারত সরকার। দিল্লির আশা— ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, তা রক্ষায় আন্তরিক হবেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৫
Share:

পাকিস্তানের ইমরান খান সরকারের মতিগতির ওপর আপাতত নজর রাখছে ভারত সরকার। দিল্লির আশা— ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, তা রক্ষায় আন্তরিক হবেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুক্রবার কলকাতায় পাকিস্তানে ভারতের হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়া এ কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘আপাতত দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর পথেই এগোতে চায় দিল্লি।’’

Advertisement

কলকাতা আইআইএম (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট)-এ শুক্রবার বিসারিয়ার বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘কড়া প্রতিবেশীদের মোকাবিলা: ভারত যে ভাবে এগোচ্ছে’। কিন্তু তার অধিকাংশ জুড়ে থাকল দিল্লির পাকিস্তান-নীতির ব্যাখ্যা। বিসারিয়ার কথায়, এই ঝোড়ো আবহাওয়াতেও দু’দেশের মধ্যে ৫০০ কোটি ডলারের ব্যবসা হয়। আর সমীক্ষা বলছে, অনায়াসে এই অঙ্ককে ৩০০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বিসারিয়া জানান, তিনি নিজে আদতে অর্থনৈতিক কূটনীতিক। কেরিয়ারের প্রায় পুরোটা তিনি এই ক্ষেত্রেই কাজ করছেন। তাঁকে পাকিস্তানে দূত হিসেবে বাছাতেই স্পষ্ট হয়েছে দিল্লি কী চায়। নানা ‘নন-ট্যারিফ’ বাধা কাটিয়ে নতুন নতুন ক্ষেত্রে দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোকেই তিনি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।

বিসারিয়ার কথায়, দিল্লি ভালই জানে পাকিস্তানে শক্তির কেন্দ্র অনেক। কিছু শক্তি ভারতের সঙ্গে উত্তেজক সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখতে তৎপর। তাই শান্তি প্রক্রিয়া যখনই এগোয়, কখনও মুম্বই হামলা, কখনও কার্গিল বা কখনও সংসদে হানা ঘটে যায়। শপথে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে আমন্ত্রণ জানান নরেন্দ্র মোদী। ২০১৫-য় ইসলামাবাদে নেমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে যাওয়া মোদীকে নিজের মেয়ের বিয়েতে ধরে নিয়ে যান শরিফ। কিন্তু তার পরেই পঠানকোট ও উরির সেনাছাউনিতে জঙ্গি হানায় সব ওলটপালট হয়ে যায়। তাই দিল্লির যুক্তি— শান্তি প্রক্রিয়া এগোলেই যদি সন্ত্রাসের শিকার হতে হয়, সে পথে এগোনোর দরকার কি?

Advertisement

তবে বিসারিয়া বুঝেছেন, ও দেশের অধিকাংশ মানুষ ভারতকে শত্রু ভাবে না। দু’দেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি, এমনকি রান্নাবান্নাও এক। এত বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে চিন সীমান্তে যদি শান্তি রাখা যায়, পাক সীমান্তেও শান্তি রাখা সম্ভব।

বিসারিয়া কলকাতা আইআইএম-এর প্রাক্তনীও। প্রতিষ্ঠানের ২৪ তম বক্তৃতা-সভায় ডাক পড়তে তাই চলে এসেছেন। জানালেন, মাত্র দু’বছর পড়েছিলেন এখানে। পাশ করে বেরিয়েছেন ৩৩ বছর আগে। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিন রাত তিনটে পর্যন্ত যে আড্ডা বসত, সব চেয়ে বেশি শিখেছি তো তা থেকেই। গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে এখনও সেই শিক্ষাই কাজে লেগে যায়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement