China Pakistan Economic Corridor

চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের দ্বিতীয় সম্মেলনও বয়কট? ইঙ্গিত নয়াদিল্লির

চিনের এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে শুরু থেকেই উদ্বেগের কথা জানিয়ে এসেছে ভারত।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ১৬:৪৩
Share:

গ্বদর বন্দর। ফাইল চিত্র।

ইউরোপ, এশিয়া আর আফ্রিকাকে জল, সড়ক, রেল, পাইপলাইন এবং আকাশপথে যুক্ত করতে চিনের স্বপ্নের প্রকল্প ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর দ্বিতীয় সম্মেলনও বয়কট করতে পারে ভারত। চিনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মিলল সেই ইঙ্গিত। চিন সরকার পরিচালিত গ্লোবাল টাইমস সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সাফ জানিয়েছেন, ‘কোনও দেশের পক্ষেই এমন কোনও প্রকল্পে যুক্ত হওয়া সম্ভব নয়, যা কোনও একটি অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব এবং প্রাদেশিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করত পারে।’

Advertisement

ভারতের দীর্ঘদিনের আপত্তি এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের একটি নির্দিষ্ট অংশ নিয়ে। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিককরিডর নামের এই রাস্তা চিনের কাশগড়কেগ্বাদর সমুদ্র বন্দরের মাধ্যমে সরাসরি যুক্ত করছে আরব সাগরের সঙ্গে। এই রাস্তার একটি অংশ যাচ্ছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ভিতর দিয়ে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে পাকিস্তানের অংশ বলে স্বীকার করে না ভারত। তাই ভারতের যুক্তি, এই রাস্তা তৈরি হলে আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বে ভাগ বসাবে চিন।

চিনা সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, ‘যোগাযোগ উন্নত করার প্রকল্প তৈরির সময় খেয়াল রাখা উচিত, যাতে তা কখনই আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব নষ্ট না করে।’ একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাদের গোপন করার কিছুই নেই। বেল্ট অ্যান্ড রোড নিয়ে আমাদের অবস্থান সব সময়ই আমরা স্পষ্ট করেই জানিয়েছি।’

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রতিবেশী দেশগুলিকে ঋণের জালে জড়িয়ে প্রভাব বিস্তার করছে চিন, সতর্ক করল আমেরিকা

এই বছরই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে দ্বিতীয় সম্মেলনের আয়োজন করার পরিকল্পনা চিনের। কিছু দিন আগেই চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই জানিয়েছিলেন, এই দ্বিতীয় সম্মেলনে হাজির থাকবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এর আগে এই সম্মেলন হয়েছিল ২০১৭ সালে। তখনও একই যুক্তিতে এই সম্মেলন বয়কট করেছিল নয়াদিল্লি।

চিনের এই বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে শুরু থেকেই উদ্বেগের কথা জানিয়ে এসেছে ভারত। সেই উদ্বেগ এখন ভারত ছাড়াও অন্যান্য অনেক দেশের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে। চিনের এই প্রকল্প নিয়ে অস্বস্তি আছে আমেরিকারও।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

চিনের বিরুদ্ধে উঠছে এই প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে একের পর এক দেশকে ঋণের নাগপাশে জড়িয়ে ফেলার অভিযোগ। ঋণ শোধ করতে না পারায় শ্রীলঙ্কার হামবানতোতা সমুদ্রবন্দরটি ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়ে নিয়েছে চিন সরকার।পাশাপাশি, এই প্রকল্পের বেশ কয়েকটি অংশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালয়েশিয়াও। চিনের সব সময়ের বন্ধু পাকিস্তানও দেশকে ঋণের দায় থেকে মুক্ত করতে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের খরচ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব নষ্ট করার যে অভিযোগ ভারত তুলছে, তা শুধু ভারতের একার সমস্যা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে, আরও বেশ কয়েকটি দেশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন