বীরেন্দ্র সিংহ ধনোয়া। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।
ফের বালাকোটের মতো পাকিস্তানের মাটিতে থাকা জঙ্গি শিবিরে বিমান হানা জন্য তৈরি হচ্ছে ভারতীয় বায়ু সেনা? আবার বিমান হানা বা সামরিক কোনও পদক্ষেপের জল্পনা সোমবার শুরু হয়ে যায় বায়ু সেনা প্রধানের সাংবাদিক বৈঠকের পর থেকেই।
এ দিন কোয়মবত্তূরে বায়ু সেনা প্রধান বীরেন্দ্র সিংহ ধনোয়াকে সাংবাদিকরা ভেঙে পড়া মিগ-২১ বাইসনের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। সেই প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়েই এয়ার চিফ মার্শাল বলেন, ‘‘আমি চলতে থাকা(অনগোয়িং)অপারেশনের ব্যপারে কিছু বলব না।” অর্থাৎ তাঁর কথায় স্পষ্ট ইঙ্গিত বালাকোটেই শেষ নয়, পাক মাটিতে বেড়ে ওঠা জঙ্গি শিবিরের বিরুদ্ধে অভিযান।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বায়ুসেনা প্রধানের ওই মন্তব্য প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিক মন্তব্যও। ২৮ ফেব্রুয়ারি যখন পাক পার্লামেন্টে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন, তখন বিজ্ঞান ভবনে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি বালাকোট বিমান হানাকে ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ বলে উল্লেখ করে বলেন‘‘ আগেরটা ছিল অনুশীলন। এবার হবে আসল।’’
ভারতীয় বায়ুসেনা সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানতেন?
আরও পড়ুন: নিহতের সংখ্যা গুনি না, আমরা শুধু লক্ষ্যে আঘাত করি, বললেন বায়ুসেনা প্রধান
ওই দিন বিকেলেই নয়া দিল্লির বিজয় চকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিন বাহিনীর তিন শীর্ষ প্রতিনিধি। সেখানে ২৬ ফেব্রুয়ারির বিমান হানার প্রসঙ্গ ছাড়াও উঠে আসে ভারতের আকাশ সীমা পেরিয়ে পাক ফাইটার জেটের ভারতের মাটিতে হামলা চালানোর চেষ্টার কথা। ওই সময়ও সেনা বাহিনীর মেজর জেনারেল এস এন বহেল বলেন,‘‘যতক্ষণ পাকিস্তানের মাটিতে তাদের সাহায্যে জঙ্গি শিবির, জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, ততক্ষণ তা ধ্বংস করার জন্য আমরা তৈরি।”
বালাকোট বিমান হানার পর বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী-সহ একাধিক শীর্ষ সামরিক পদাধিকারীর মন্তব্য শুনে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া এবং বেড়ে ওঠা জঙ্গি কার্যকলাপ গোড়া থেকে উপড়়ে ফেলতে দীর্ঘকালীন এবং বৃহত্তর পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত। সেখানে কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি সামরিক সক্রিয়তার সমস্ত রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে। ভারতীয় গোয়েন্দাদের একাংশও মনে করছেন, নিয়মিত সামরিক অভিযান ছাড়া জেহাদের ‘ভূত’ দূর করা সম্ভব নয়। কারণ ইতিমধ্যেই তাঁরা খবর পেয়েছেন, আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তান জইশের বিরুদ্ধে কিছু ‘কড়া’ ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা ঘোষণা করতে পারে। কারণ পাকিস্তানের তথ্য মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরি পাক সংবাদমাধ্যম জন নিউজকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বলেন “দেশের মধ্যে সক্রিয় সমস্ত সন্ত্রাসবাদী বা জঙ্গি সংগঠন গুলির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার।”
আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে গেলেন জয় পণ্ডা
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, সাময়িকভাবে জইশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে ধরে নিয়েই পাক গোয়েন্দা সংস্থা জঙ্গি সংগঠন আল বদর-কে শক্তিশালী করে তুলতে উদ্যোগী হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দাদের দাবি, আফগানিস্তান পাকিস্তান সীমান্তে ইতিমধ্যেই আল-বদর নতুন সদস্য নিয়োগ শুরু করে দিয়েছে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা এ বার কাশ্মীরে আল-বদর-কে সামনে রেখে ‘ছায়া যুদ্ধ’ চালাবে পাকিস্তান।
আর সেই কারণেই গোয়েন্দারা মনে করছেন, নিয়মিত ভাবে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সামরিক আঘাত হানা সম্ভব হলে বাগে আনা যাবে পাক মদত পুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলিকে।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)