OIC

ইসলামিক দেশগুলির শীর্ষ বৈঠকে আমন্ত্রিত ভারত, বেরিয়ে গেল ক্ষুব্ধ পাকিস্তান

পৃথিবী অত্যন্ত প্রভাবশালী এই রাষ্ট্রগোষ্ঠীতে এর আগে ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েও শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল ১৯৬৯ সালের মরক্কো বৈঠকে। সেই বারও ভারতের উপস্থিতিতে প্রবল আপত্তি জানিয়েছিল পাকিস্তান। এবারও সেই চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত এই অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন সুষমা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৯ ১৩:৩১
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

পুলওয়ামা সন্ত্রাস পরবর্তী কূটনৈতিক সাফল্যের দৌড় এবার পৌঁছে গেল পৃথিবীর ইসলামিক দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনেও। এবারই প্রথম আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছে ভারত। আবু ধাবিতে ‘অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন’-এর এই বৈঠকে ভারতের এই উপস্থিতিতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়ল পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, এই সম্মেলনে না যাওয়ার কথা জানিয়েও দিলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি।

Advertisement

প্রথম বারের জন্য আবু ধাবিতে পৃথিবীর ৫৭টি মুসলিম দেশের সংগঠন ‘অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)’-র বিদেশমন্ত্রীরদের পরিষদে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ভারতকে । ভারতের তরফে এই বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করবেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এই বৈঠকে পৃথিবীর মুসলিম দেশগুলির কাছে পাকিস্তানের সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরতে পারেন সুষমা । ওআইসি দেশগুলির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও স্থায়ী সদস্য পাকিস্তানের পক্ষে ভারতের এই উপস্থিতি স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তির। আর তা এতটাই যে, এই বৈঠকে অংশ না নেওয়ার কথাও জানিয়ে দিল পাকিস্তান।

‘মুসলিম দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে আমি না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সুষমা স্বরাজকে আমন্ত্রণ জানানোয় নীতিগত ভাবেই এই বৈঠকে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।’’ আজ পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির যৌথ অধিবেশনে এই ঘোষণা করেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাতিল হচ্ছে মিগ ২১, আকাশযুদ্ধকে অন্য মাত্রা দিতে আসছে তেজস

মুসলিম দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনে ভারতের বক্তব্য তুলে ধরতে গতকাল রাতেই আবু ধাবিতে পৌঁছে গিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। ভারতকে আগে থেকেই এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ওআইসি। কিন্তু পুলওয়ামা কাণ্ডের পর ভারত যাতে এই সম্মেলনে অংশ না নিতে পারে, তার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছিল ইসলামাবাদ। জইশ ঘাঁটি ধ্বংস করতে আন্তর্জাতিক সীমা পেরিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের বোমাবর্যণের ঘটনাটিকে হাতিয়ার করেই এই চেষ্টায় নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। কিন্তু তাঁর কথায় যে চিড়ে ভেজেনি, তার প্রমাণ সুষমাকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তে মুসলিম দেশগুলির অনড় হয়ে থাকায়।

ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব নিয়ে এই বিষয়গুলি জানেন?

পৃথিবী অত্যন্ত প্রভাবশালী এই রাষ্ট্রগোষ্ঠীতে এর আগে ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়েও শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছিল ১৯৬৯ সালের মরক্কো বৈঠকে। সেই বারও ভারতের উপস্থিতি নিয়ে প্রবল আপত্তি জানিয়েছিল পাকিস্তান। এবারও সেই চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত এই অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন সুষমা।

আরও পড়ুন: মাসুদ আজহার রয়েছেন পাকিস্তানেই, তবে ভর্তি হাসপাতালে, জানালেন পাক বিদেশমন্ত্রী

সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে, এমনটাই জানিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। একই সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী জানিয়েছে, ‘ইসলামিক দুনিয়ায় ভারতের অবদান এবং সেখানে বসবাসকারী প্রায় ১৮.৫ লক্ষ মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের কথা মাথায় রেখেই এই স্বীকৃতি।’ এই আমন্ত্রণ পাওয়ার পর গত সপ্তাহেই এই বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়ে দেয় নয়াদিল্লি।

দীর্ঘ দিন ধরেই ইসলামিক দেশগুলির এই প্রভাবশালী জনগোষ্ঠীতে জায়গা করে নিয়ে কূটনৈতিক চেষ্টা চালাচ্ছিল নয়াদিল্লি। প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির নেতৃত্বে সেই চেষ্টা অনেক দূর এগিয়েছিল। ভারতের এই দাবিতে সব সময় পাশেই ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিবারই পাকিস্তানের অনড় মনোভাবে তা ভেস্তে গিয়েছে। সেই কারণেই আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে এই রাষ্ট্রগোষ্ঠীর শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের যোগ দেওয়া সাম্প্রতিক কালের অন্যতম সেরা কূটনৈতিক সাফল্য বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন