ফরজাদ নিয়ে টানাপড়েনে ভারতের মতো হাই-প্রোফাইল ক্রেতা হাতছাড়া হলে ইরান নিঃসন্দেহে কিছুটা ধাক্কা খাবে। বলছে ওয়াকিবহাল মহল। —ফাইল চিত্র।
ইরানের কাছ থেকে তেল কেনার পরিমাণ হঠাৎ কমিয়ে দিতে পারে ভারত। গত বছর প্রতি দিন গড়ে যে পরিমাণ খনিজ তেল ইরানের কাছ থেকে ভারত নিত, এ বছর সেই পরিমাণ এক ধাক্কায় ২৫ শতাংশ কমে যেতে পারে বলে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রের খবর। ইরানের বিপুলায়তন প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্র ফরজাদে গ্যাস উত্তোলন পরিকাঠামো তৈরির বরাত নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয়েছে নয়াদিল্লি এবং তেহরানের মধ্যে। তার জেরেই আচমকা ইরানের কাছ থেকে ভারত তেল কেনা কমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইরানের কাছ থেকে যে সব দেশ খনিজ তেল কেনে, তাদের মধ্যে ভারত দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা। চিনের পরেই। ২০১৬ পর্যন্ত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের থেকে তেল কিনত না অধিকাংশ দেশ। কিন্তু ভারত প্রতিদিন গড়ে ৫ লক্ষ ১০ হাজার ব্যারেল খনিজ তেল কিনত ইরানের থেকে। সেই বিপুল বরাত এ বার বাতিল হতে পারে বলে জল্পনা। ইরানের ফরজাদ বি ন্যাচরাল গ্যাস ফিল্ডের বরাত ভারতীয় সংস্থাকে দেওয়ার বিষয়ে কথা চলছিল নয়াদিল্লি এবং তেহরানের মধ্যে। কিন্তু সেই বরাত পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ভারতীয় সংস্থাটি বরাত না পেলে ভারত সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলিকে ইরান থেকে তেল আমদানির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেবে বলেও নাকি তেহরানকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শুধু ফরজাদ নিয়ে টানাপড়েন নয়, ইউরোপ থেকে সস্তায় তেল পাওয়াও ভারতের নতুন পরিকল্পনার অন্যতম কারণ, বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। — রয়টার্স থেকে নেওয়া ফাইল চিত্র।
ফরজাদ প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্র নিয়ে ভারতের দাবি কি মানল না ইরান? ভারত সরকার কি প্রতিক্রিয়ায় ইরান থেকে তেল আমদানি কমিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল? রাষ্ট্রায়ত্ত হোক বা বেসরকারি, কোনও পেট্রোলিয়াম সংস্থাই এই সব প্রশ্নের জবাব দিতে চায়নি। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকও জবাব এড়িয়ে গিয়েছে। তবে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ২০১৭-’১৮ অর্থবর্ষে ইরানের কাছ থেকে ভারতের তেল আমদানির পরিমাণ নিঃসন্দেহেই কমতে চলেছে।
আরও পড়ুন: নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে চলে গিয়েছে রক্তের দাগ, বিদেশ মন্ত্রকে তলব পাক দূতকে
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ইরানের থেকে তেল আমদানির পরিমাণ ভারত যদি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে তার একমাত্র কারণ ফরজাদ নিয়ে টানাপড়েন নয়। ইউরোপ থেকে এখন আরও সস্তায় তেল আমদানি করা সম্ভব, বলছে ওয়াকিবহাল মহল। সে কথা মাথায় রেখেই এ বার ভারত ইউরোপীয় খনিজ তেল আমদানির দিকে ঝুঁকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।