জঙ্গি প্রশ্রয় নিয়ে চিনকে চাপ দিল্লির

জঙ্গিকে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে বেজিং-এর উপর চাপ তৈরি করল নয়াদিল্লি।আজ মস্কোয়, চিন-রাশিয়া-ভারত শীর্ষ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে মুখোমুখি হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫৯
Share:

জঙ্গিকে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নে বেজিং-এর উপর চাপ তৈরি করল নয়াদিল্লি।

Advertisement

আজ মস্কোয়, চিন-রাশিয়া-ভারত শীর্ষ সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে মুখোমুখি হয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ এবং চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেই বৈঠকে জইশ ই মহম্মদের নেতা মাসুদ আজহারের প্রসঙ্গটি তুলে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন সুষমা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এই বিষয়টি কার্যত ভারত-চিন সম্পর্কে গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী তালিকায় আজহারকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে ভারতের সাম্প্রতিক আবেদনে বাগড়া দিয়েছে চিন। নিরাপত্তা পরিষদের অন্যতম সদস্য হিসাবে নিজেদের ভেটো প্রয়োগ করে মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপূঞ্জের তালিকার বাইরেই রেখেছে তারা।

পঠানকোট কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে যখন ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে ছিলা টানটান কূটনীতি চলছে, ঠিক সেই সময়ে চিনের এই পক্ষপাতদুষ্ট পদক্ষেপ নয়াদিল্লির পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব বলেই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। বিশেষত এমন একটি সময়ে ভারত এই আবেদন রাষ্ট্রপুঞ্জের সামনে রেখেছে যখন পঠানকোট কাণ্ডের সঙ্গে মাসুদ আজহারের যোগসাজস স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের তদন্তে। এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও নথি ইসলামাবাদের হাতে তুলে দেওয়ার পরেও কোনও হেলদোল দেখায়নি পাকিস্তান সরকার। সে দেশের বিশেষ তদন্তকারী দলটি সমস্ত অভিযোগ ও তথ্য সংগ্রহ করে চলে যাওয়ার পরেও বেসুরে বেজেছে ইসলামাবাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব।

Advertisement

এমতাবস্থায় প্রকাশ্যে পাকিস্তানের পাশে এসে চিনের দাঁড়ানোর ঘটনাকে ভূকৌশলগত ষড়যন্ত্র হিসাবেই দেখছে নয়াদিল্লি। বিষয়টি যে শুধুমাত্র এক বার ঘটল এ রকমও নয়। এর আগে ২০০৮ সালে মুম্বই সন্ত্রাসের পর আজহারেরর উপর রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞার দাবি তুললেও তা শেষমেশ চিনের দেওয়ালে আটকে গিয়েছিল। গত জুলাই মাসেও একই ভাবে মুম্বই হামলার প্রধান মস্তিষ্ক জাকিউর রহমান লকভিকে পাকিস্তানের ছেড়ে দেওয়ার ঘটনাটিকে সমর্থন করেছিল বেজিং। ভারত সেই সময় চেয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ কড়া ব্যবস্থা নিক ইসলমাবাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু সে সময় চিনের বক্তব্য ছিল, পাকিস্তান যা করেছে তা নিরপেক্ষ ভাবে বিবেচনা করেই করেছে।

গত সপ্তাহেই বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন আজহারকে সন্ত্রাসবাদী তালিকা থেকে বাদ রাখার জন্য বেজিং-এর প্রয়াসকে ভারত-চিন উচ্চপর্যায়ে তোলা হবে। চিন অবশ্য তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাফাই গাইতে কসুর করেনি। তাদের বক্তব্য, যা করা হয়েছে তা বাস্তব এবং ন্যায়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই করা হয়েছে।

সুষমা আজ তাঁর বৈঠকে ভারতের কড়া মনোভাব সরাসরি চিনের বিদেশমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়ার পর কোন পথে হাঁটবে বেজিং— নজর এখন সে দিকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন