Corruption Index 2024

ভারতে দুর্নীতি বাড়ছে, তবে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পরিস্থিতি আরও সঙ্গিন! সূচকে কোথায় আছে চিন

সরকারি হোক বা রাজনৈতিক কর্মশালা— সর্বত্রই দুর্নীতি রোধের কথা বলতে শোনা যায় প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের। কিন্তু কথার সঙ্গে কি বাস্তবের মিল রয়েছে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৪
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

অর্থনীতির বহর বা শিল্পায়ন নিয়ে যত না উচ্চবাচ্য হয়, তার চেয়ে ঢের বেশি কথা হয় দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়া নিয়ে। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশবাসীকে দুর্নীতিমুক্ত ভারতের স্বপ্ন দেখিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সরকারি হোক বা রাজনৈতিক কর্মশালা— সর্বত্রই দুর্নীতি রোধের কথা বলতে শোনা যায় প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যদের। কিন্তু কথার সঙ্গে কি বাস্তবের মিল রয়েছে? সাম্প্রতিক সমীক্ষার রিপোর্ট কিন্তু উল্টোটাই ইঙ্গিত করছে। দেখা যাচ্ছে, দুর্নীতির সূচকের নিরিখে আরও নীচের দিকে নামল ভারতের স্থান। বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ভারতের ঠাঁই ৯৬ নম্বরে। গত বছর ছিল ৯৩ নম্বরে।

Advertisement

জার্মানির সংস্থা ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল’ প্রতি বছর ‘দুর্নীতি উপলব্ধি সূচক’ (করাপশন পারসেপশন ইনডেস্ক) প্রকাশ করে। কোন দেশ দুর্নীতিতে কতটা জর্জরিত, তা-ই জানানো হয় সেই রিপোর্টে। ২০২৪ সালে কোন দেশ দুর্নীতিতে ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে, তার রিপোর্ট সম্প্রতিই প্রকাশিত হয়েছে। ‘ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল’-এর রিপোর্ট বলছে, শুধু ভারত নয়, পড়শি দেশ বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। সূচক-তালিকায় তারা রয়েছে যথাক্রমে ১৫১ এবং ১৩৫ নম্বরে।

১০০-এর মধ্যে কোন দেশ কত নম্বর পাচ্ছে, তার ভিত্তিতে এই তালিকা তৈরি করে জার্মান সংস্থাটি। ২০২৪ সালের বিচারে ভারত পেয়েছে ৩৮। বাংলাদেশ ২৩ এবং পাকিস্তান ২৭। শ্রীলঙ্কার অবস্থানও নিম্নগামী। গত বারের থেকে দু’ধাপ নীচে নেমেছে ওই দেশটি। তবে রিপোর্ট অনুযায়ী, চিনে দুর্নীতি সামান্য কমেছে। তালিকায় এক ধাপ উপরে উঠেছে তারা। গত বছরে চিনের ঠাঁই ছিল ৭৭ নম্বরে। এ বার চিন ৭৬ নম্বরে। ১০০-এর মধ্যে তারা পেয়েছে ৪৩ নম্বর। দুর্নীতি বেড়েছে আমেরিকায়। তালিকায় আমেরিকার স্থান ২৮ নম্বরে। গত বার তারা ২৪ নম্বরে ছিল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা বা অস্বচ্ছতা নিয়ে বিভিন্ন সূচকের উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই রিপোর্ট তৈরি করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। তথ্য নেওয়া হয় বিশ্বব্যাঙ্ক, আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, আইএমডি বিজনেস স্কুলের মতো প্রথম সারির আর্থিক বা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কাছ থেকে। তার ভিত্তিতেই নম্বর দেওয়া হয় এবং তৈরি হয় তালিকা।

সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসাবে প্রথম স্থানে এ বারও রয়েছে ডেনমার্ক। বিশেষজ্ঞদের মত, এই সব দেশ রাতারাতি স্বপ্নের দেশে রূপান্তরিত হয়নি। সেখানেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। যেমন ডেনমার্কে সপ্তদশ শতাব্দীতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হল, ঘুষকে দণ্ডনীয় অপরাধ ঘোষণা করা। আবার উনিশ শতকে সরকারি কর্মচারীদের কাজের নৈতিক মানদণ্ড চালু হয় সেখানে। দুর্নীতি বন্ধে স্ক্যান্ডেনেভিয়ার দেশগুলির সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে দীর্ঘ আন্দোলন। সেখানে সামাজিক সুরক্ষা অত্যন্ত সুদৃঢ়।

দুর্নীতির সূচক-তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে নিউ জ়িল্যান্ড এবং ফিনল্যান্ড। আর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসাবে শেষ সারিতে জায়গা পেয়েছে দক্ষিণ সুদান এবং সোমালিয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement