দুই প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে পুষ্পকমল দহল (প্রচণ্ড) ও নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
কাঠমান্ডুর সঙ্গে নয়াদিল্লির দীর্ঘদিন রাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক অস্থিরতা চলার পরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে মোড় ঘোরানোর চেষ্টা শুরু হল। চার দিনের ভারত সফরে আসা নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল (প্রচণ্ড)-র সঙ্গে আজ বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ ভারতীয় শীর্ষ নেতৃত্ব। সে দেশের রাস্তা এবং অন্যান্য পরিকাঠামো প্রকল্প গঠনে তিনটি চুক্তি সইয়ের পাশাপাশি নেপালকে ৭৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি। প্রচণ্ডকে পাশে নিয়ে আজ মোদী বলেন, ‘‘নেপালের শান্তি, সুস্থিতি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আমাদের যৌথ দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। নেপালের উন্নয়ন প্রকল্পে ও অর্থনৈতিক প্রগতিতে শরিক হতে পারাটা গৌরবের।’’
এর পাশাপাশি নেপালের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নয়াদিল্লির অনুরোধ, নয়া সংবিধানে নেপালের সমস্ত অংশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিনিধিত্ব ঘটানো হোক। প্রচণ্ড বলেন, ‘‘আমার সরকার সংবিধান প্রণয়নের ক্ষেত্রে সবাইকে নিয়ে চলতে চায়।’’
‘সমস্ত অংশ’ অর্থাৎ ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয়, থারু সম্প্রদায়কে নেপালের নতুন সংবিধানে জায়গা না দেওয়া নিয়েই নেপালের ভেতরে এবং ভারত-নেপাল সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে গত জুনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলিকে পদত্যাগ করতে হয়। নতুন প্রধানমন্ত্রী হন প্রচণ্ড।
প্রতিবেশী কূটনীতিতে প্রথম থেকেই নেপালকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছেন মোদী। তাঁর প্রথম বিদেশ সফরের ঠিকানা ছিল কাঠমান্ডু। কিন্তু এক বছরে তাদের নতুন সংবিধান রচনাকে ঘিরে নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়েছিল। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এর পিছনে ইন্ধন ছিল বেজিংয়ের। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় ও থারু সম্প্রদায়ের দাবিকে নেপালের নতুন সংবিধানে স্থান না দেওয়া নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে সে দেশের তরাই এলাকা। অগ্নিগর্ভ হয় ভারত-নেপাল সীমান্ত।
আজকের বৈঠকের মাধ্যমে যেমন চিনকে ভারত-নেপাল সম্পর্কের মধ্যে নাক না-গলানোর বার্তা দেওয়া হলো, তেমনই নেপাল ও ভারত, দু’পক্ষই ক্ষত মেরামতির রাস্তায় সফল পদক্ষেপ করল বলে মনে করা হচ্ছে।