বিলাল মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। ছবি: রয়টার্স।
শুরু হয়েছিল রাত ১টা বেজে ৫ মিনিটে। রাত দেড়টার মধ্যে কাজ শেষ! মাত্র ২৫ মিনিটে ২৪ বার আঘাত হেনে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাক পঞ্জাবের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় সেনা। মঙ্গলবার রাতে সেই ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে অন্তত ৭০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি সরকারি সূত্রে।
যদিও এ ব্যাপারে ভারত সরকার বা ভারতীয় সেনার তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে পাকিস্তানের দাবি, ভারতের হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছে। বুধবার দুপুরে পাক সেনার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতর (আইএসপিআর)-এর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধরি জানিয়েছেন, ভারতের হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বহাওয়ালপুরের আহমেদপুর ইস্ট শহরে। সেখানে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’টি তিন বছরের শিশু, সাত জন নারী ও চার জন পুরুষ। এ ছাড়া ৩৭ জন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ এবং ন’জন নারী। পাশাপাশি পাক সেনার দাবি, ভারতের কোনও যুদ্ধবিমানকে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে দেওয়া হয়নি।
ভারতের গোয়েন্দা সূত্র জানাচ্ছে, যে নয় জায়গায় ভারতীয় সেনা প্রত্যাঘাত করেছে, তার চারটি জায়গা পাকিস্তানে এবং পাঁচটি পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। পাক পঞ্জাবের যে চারটি জায়গায় হামলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে— বহাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং সিয়ালকোট এবং কোটলি। অন্য দিকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদ, গুলপুর, ভীমবের, চাক আমরু, বাগে হামলা চলেছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রচুর সূত্র কাজে লাগিয়ে ন’টি জায়গা চিহ্নিত করেছিল ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা। সেই ‘ইনপুট’ যায় সেনার কাছে। শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তোড়জোড়। তার পরেই মঙ্গলবার আসে প্রত্যাঘাতের রাত। আর হামলায় ব্যবহার স্ক্যাল্প এবং হ্যামার মিসাইলের মতো বিশেষ গোলাবারুদ।
সরকারি সূত্রেই দাবি, বহাওয়ালপুরের উপকণ্ঠে এনএইচ-৫ যেখান দিয়ে গিয়েছে, সেখানে প্রায় ১৫ একর জমি জুড়ে জৈশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান প্রশিক্ষণ এবং প্রচারকেন্দ্র। বলা হয়, এটাই জৈশের সদর দফতর। ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলায় যুক্ত ওই জঙ্গিগোষ্ঠীর ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছে ভারত। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান জইশের প্রতিষ্ঠাতা মৌলানা মাসুদ আজ়হারের পরিবারের ১০ জনের মৃত্যুও হয়েছে ভারতের হামলায়। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের শহর মুরিদকে হল লশকর-এ-ত্যায়বার ‘মুলুক’। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলায় মূলচক্রী হাফিজ় সইদ মুরিদকেতে থাকত। মঙ্গলবার রাতে সেখানেও হামলা দিয়েছে ভারতীয় সেনা।