ইউপিএ সরকারকে পরোক্ষে খোঁচাও দিয়েছেন নির্মলা।
ভোর চারটের সময়ে খবর পেয়েছিলেন সব পাইলট নিরাপদে ফিরেছেন। তার পরে স্বস্তির নিঃশ্বাস পড়েছিল তাঁর। বালাকোট অভিযানের কথা বলতে গিয়ে এমন মন্তব্যই করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হলেও এই অভিযানের কথা তিনি প্রথমে জানতেনই না বলে দাবি করেছে নানা শিবির। সে কথা উড়িয়ে দিয়ে নির্মলার দাবি, তিনি প্রথম দিন থেকেই গোটা পরিকল্পনার কথা জানতেন।
এক সাক্ষাৎকারে নির্মলা বলেছেন, ‘‘বহুমেরু বিশ্বে অনেক দেশই নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে। ভারত অনেক দেশের সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা বাড়ালেও নিজের কৌশলগত স্বাধীনতা বজায় রেখেছে। পুলওয়ামার পরে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য অনির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা করব না।’’
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘‘ভারত সরকার দীর্ঘদিন ধরে দ্বিপাক্ষিক স্তরে ও রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো বহুপাক্ষিক মঞ্চে সন্ত্রাসে পাকিস্তানি মদতের কথা জানিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ইচ্ছে দেখায়নি। এমন একটি গোষ্ঠী পুলওয়ামা হামলার দায় নিয়েছে, যাদের ঘাঁটি পাকিস্তানে। সেই বিষয়েও আগের সরকার এবং আমাদের সরকার বহু বার প্রমাণ পেশ করেছে। তাতেও কোনও কাজ হয়নি। ফলে এর পরে কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে তা ভাবতে বাধ্য হয়েছিল ভারত সরকার।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই প্রসঙ্গে ইউপিএ সরকারকে পরোক্ষে খোঁচাও দিয়েছেন নির্মলা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভেবে দেখা দরকার ২৬/১১-এর পরে এমন ব্যবস্থা নিলে পুলওয়ামা আদৌ ঘটত কি না। এই প্রশ্নের জবাব দেওয়া আমাদের কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। কারণ, পাকিস্তানে কার মগজে কী পরিকল্পনা তৈরি হবে তা বলা কঠিন। তবে আমার মনে হয়, তখন কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হলে হয়তো সন্ত্রাসের রূপ এত ভয়ঙ্কর হত না।’’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হলেও তিনি নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বৃত্তে নেই বলে দাবি করেছে বিভিন্ন শিবির। বালাকোট অভিযানের পরিকল্পনার সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না বলেও দাবি করা হয়েছে। নির্মলার বক্তব্য, ‘‘এ সব কথার কোনও ভিত্তি নেই। আমি প্রথম থেকেই গোটা পরিকল্পনার কথা জানতাম।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পুলওয়ামা হামলার পরে আমরা দশ দিন অপেক্ষা করেছিলাম। তার পরে অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়। অভিযানের দিন প্রধানমন্ত্রীর মতো আমিও ঘুমোইনি। ভোর চারটে নাগাদ খবর পাই আমাদের সব বিমান ফিরেছে। তখনই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলি।’’ পরের দিন পাল্টা হামলা চালায় পাক বায়ুসেনা। আকাশ-যুদ্ধের পরে ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দন বর্তমান পাক সেনার হাতে বন্দি হন। নির্মলা জানান, অভিনন্দন না ফেরা পর্যন্ত প্রত্যেকটি পদক্ষেপের উপরে নজর রেখেছিলেন তিনি।
নির্মলার বক্তব্য, ‘‘ভারত সন্ত্রাসের স্নায়ুকেন্দ্র বালাকোটে অভিযান চালিয়েছে। বরং পাকিস্তানই ভারতের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা করেছে। কেউ কেউ আমাদের প্রশ্ন করেন, উত্তেজনা কমাতে আমরা কী করছি? আমি জবাবে জানাই, আমরা উত্তেজনা বাড়াইনি।’’